
পাহাড়ের কথা ডেস্ক।
বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলা সদর এলাকায় নির্মাণের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও চালু হয়নি থানচি বাস টার্মিনাল। ফলে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, সড়কে বিশৃঙ্খলা ও স্থায়ী যানজট স্থানীয়দের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে বেশি দুর্ভোগে পড়ছেন চালক, যাত্রী ও পাহাড় দেখতে আসা দেশি–বিদেশি পর্যটকরা।
সরেজমিনে জানা যায়, দুই বছর আগে সমাপ্ত হয়েছে থানচি বাস টার্মিনাল নির্মানের কাজ। পুরনো হয়ে গেছে দেয়ালের রং পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে আসবাবপত্র। তবুও চালু হয়নি বাস টার্মিনালটি। ২০২২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে থানচি উপজেলায় শুরু হয় বাস টার্মিনাল নির্মাণের কাজ। ২০২৪ সালে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও এখনও চালু হয়নি টার্মিনালটি। এর ফলে অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে টার্মিনালটি এবং নষ্ট হতে বসেছে ভবনসহ আসবাবপত্র।
শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় ভবনের ভিতর ময়লার স্তূপসহ বখাটেদের আড্ডা খানায় পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে সৃষ্টি হয় যানজট দুর্ভোগে পড়ে যাত্রীরা। এদিকে পর্যটন এলাকা হওয়ায় প্রতিদিন শত শত পর্যটকবাহী গাড়ি চলাচল করে এ উপজেলায়। কিন্তু টার্মিনাল চালু না হওয়ায় গাড়ি পার্কিংয়ে সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। তাই সড়কে শৃঙ্খলা ফিরাতে এবং যানজট নিরসনে টার্মিনালটি দ্রুত চালুর দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয়দের অভিযোগ, টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ হলেও প্রয়োজনীয় অনুমোদন, ব্যবস্থাপনা ও জনবল নিয়োগের অভাবে এটি ব্যবহার উপযোগী হয়নি। যার ফলে থানচি বাজারসহ বাসস্ট্যান্ড এলাকার আশপাশে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে রাখায় জনসাধারণ চলাচলে মারাত্মক বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে পর্যটন মৌসুমে ভোগান্তির মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
চলকরা জানান, নির্দিষ্ট পার্কিং স্পট না থাকায় বাধ্য হয়ে তারা সড়কের দুই পাশে গাড়ি রাখতে হয়। এতে একদিকে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে, অন্যদিকে যেকোনো সময় বড় ধরনের অচলাবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
যাত্রী ও স্থানীয়রা বলেন, অগোছালো পরিবহন ব্যবস্থার কারণে সময়মতো গাড়ি পাওয়া যায় না। শীত ও বর্ষা মৌসুমে অপেক্ষামান যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহৃত পড়ে থাকা এ টার্মিনাল দ্রুত চালু করলে যানজট কমবে, বাড়বে সড়ক নিরাপত্তা—এবং উন্নত সেবা পাবেন যাত্রীসহ পর্যটন নির্ভর থানচির মানুষ।
এদিকে ভূমি রেজিস্ট্রেশন জটিলতার কারণে নির্মানের পরও টার্মিনালটি চালু করা যাচ্ছে না বলে জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম, বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত। তিনি বলেন, বাস টার্মিনাল নির্মাণের কাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হয়েছে। ভূমি রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন হলে দ্রুত সময়ে টার্মিনালটি চালু করে দেয়া হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে বাস টার্মিনালটি নির্মান করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিল্টন ট্রেডার্স