সংযম ও সমাধির পবিত্র ত্রৈমাসিক বর্ষবাস শেষে মহতী প্রবারণা পূর্ণিমার পর বান্দরবানের আলীকদমে বাবুপাড়া বৌদ্ধ বিহারে ৬ষ্ঠ তম শুভ দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে ৩নং নয়াপাড়া ইউনিয়নের অর্ন্তগত বাবুপাড়া বৌদ্ধ বিহারের বিহার পরিচালনা কমিটি ও দায়ক- দায়িকাদের আয়োজনে দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব উদযাপিত হয়।
দানোত্তম কঠিন চীবর দান উপলক্ষে দিনব্যাপী প্রথমে ভোর ৫টায় বিশ্বশান্তি মঙ্গল কামনায় সূত্রপাঠ, জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, পূজনীয় ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃরাশ,বুদ্ধপূজা, অষ্টপরিষ্কার দান,মহাসংঘদান ও কঠিন চীবরদান ও স্ব-ধর্মদেশনা প্রদান করা হয়।
সকাল থেকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী,দায়ক দায়িকাদের পদচারণায় উৎসব মুখর হতে থাকে বুদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণ। অনুষ্ঠানে পবিত্র মঙ্গলাচরণ পাঠ করা হয়। এতে শত শত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী শিশুসহ নানা বয়সের পূণ্যার্থীরা অংশ নেন। পরে পঞ্চশীলের মাধ্যমে মঙ্গলাচরনের পর চীবর উৎসর্গ করা হয়। বিহারে সমবেত প্রার্থনায় অংশ নিয়ে উপজেলার বুদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ চীবর দান করেন।
উৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতায় বিহারে অবস্থারত ভিক্ষু ও আগত ভিক্ষুদের জন্য নিজেদের তৈরি করা চীবর ও বাজার থেকে ক্রয় করা চীবর পূণ্য লাভের জন্য দান করেন ভক্তরা।
ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাবু পাড়া বুদ্ধ বিহারের বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত উ-পংঞাচারা মহাথের ভান্তের সভাপতিত্বের ও ভদন্ত জিনামেজু মহাথের ভান্তের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির সহধর্মিণী মিসেস মেহ্লাপ্রু মার্মা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাবের মোঃ সোয়াইব,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল উদ্দীন এমএ,বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য দুংড়ি মং মার্মা,আলীকদম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি খন্দকার তবিদুর রহমান,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অংশেথোয়াই মার্মা,নয়াপাড়া বৌদ্ধ বিহারের প্রদান দায়ক ফোগ্য মার্মাসহ বিভিন্ন এলাকার দায়ক দায়িকাগণ উপস্থিত ছিলেন।
বাবুপাড়া বৌদ্ধ বিহারে বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত উ-পংঞাচারা মহাথের ভান্তে জানান, যারা পূণ্যলাভের আশায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালা কঠিন চীবর দানোৎসব স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করতে স্ব-ইচ্ছায় দান ও সহযোগিতা করেছেন তাদের সকলকে প্রতি পূণ্যারাশি দান করছি।
তিনি আরও বলেন,বৌদ্ধ ধর্মীয় শাস্ত্রীয়মতে পৃথিবীতে সব দানের চেয়ে চীবর দানে ১৬ গুণের বেশি পূণ্য লাভ করা যায়। তাই কঠিন চীবর দানকে দানোত্তম বা দানের শ্রেষ্ঠ দান বলা হয়। ধর্মসভা ও পঞ্চশীল গ্রহণের পর চীবর দানের মাধ্যমে “মুক্তির অহিংসা বাণী ছড়িয়ে যাক মানুষের মাঝে এবং সামনের দিনগুলোতে শান্তি ফিরে আসুক ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের “এমন প্রার্থনার মধ্যদিয়ে চীবর দানের সমাপ্তি ঘটে।