1. admin@paharerkatha.com : paharer katha : paharer katha
  2. info@paharerkatha.com : পাহাড়ের কথা :
শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫, ০৬:২০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
আলীকদমে পারিবারিক কলহে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা, হাসপাতালে ভর্তি ৩ জন লামায় বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে আরো ৫ জেলে পেলেন ২০টি উন্নত জাতের ছাগল লামায় এপেক্স ক্লাবের শিক্ষা সামগ্রী পেল শিক্ষার্থীরা লামায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালন আলীকদমে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার দায়ে দুই জনকে জরিমানা বান্দরবানে ২১ কিলোমিটার হিল ম্যারাথন অনুষ্ঠিত লোহাগাড়া প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ও সাউন্ড হেলথ হাসপাতালের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি বান্দরবানের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে খাদ্যশষ্য প্রদান করলেন আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য কেএস মং রাঙ্গামাটিতে তরুণী ধর্ষণ মামলায় এক যুবক আটক খাগড়াছড়িতে অপহরণের ৭ দিন পর চবি’র ৫ শিক্ষার্থী মুক্ত বিদ্যুৎ চলে গেলেই ঘুটঘুটে অন্ধকারে লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রোগীদের দুর্ভোগ লামায় নিবন্ধিত জেলেরা পেলেন বিনামূল্যে উন্নত জাতের ছাগল লামায় ‘কার্প জাতীয় মাছের মিশ্র চাষ’ বিষয়ক রিফ্রেসার্স প্রশিক্ষণ সম্পন্ন লামায় “ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক” প্রশিক্ষণ চকরিয়া ভূয়া নৌবাহিনী সদস্য পরচিয়ে প্রতারণায় এক দম্পতি গ্রপ্তোর

ঈদের ছুটি কাটুক নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর অরণ্যরাণী লামায়

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৩৩৯ বার পড়া হয়েছে

এম. মিজানুর রহমান, লামা

নয়ন জুড়ানো সবুজ স্নিগ্ধ বনানী ঘেরা নৈসর্গিক সৌন্দর্য ও বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর অরন্যরানী লামা। এখানে রয়েছে সর্পিল ঢেউ খেলানো অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড় ও পাহাড়ের বুক চিড়ে বহমান নদী। মনোরম দৃশ্যের সমাহার ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারে সমৃদ্ধ লামা, ঠিক যেন শিল্পীর পটে আঁকা ছবির মতন। সর্বত্র সবুজ-শ্যামল গিরি শ্রেনীর এক অপরূপ চিত্র বৈচিত্রময় হাতছানি।

এক সময়ের দুর্গম পাহাড়ি লামা বর্তমানে কোলাহলপূর্ণ বিকাশমান পর্যটন শহর। দেখে মুগ্ধ হবার মত আছে অনেক কিছুই। চকরিয়া থেকে লামা যাওয়ার রাস্তা হলো এর শুরুর আকর্ষন। লামার রাস্তায় প্রবেশ করার সাথে সাথে পেয়ে যাবেন স্বর্গে প্রবেশের মতো একটা আমেজ। প্রাকৃতিক শোভা, বয়ে চলা পাহাড়ী আঁকা-বাঁকা মাতামুহুরী নদীর সৌন্দর্য আগমত্মকদের মুগ্ধ করে, সাথে মাতামুহুরি ব্রীজে বিকাল থেকে সন্ধ্যার পর পর্যন্ত থাকলে আপনি দেখতে পাবেন দিগন্ত রেখা। নদী আর পাহাড়ের যে অপূর্ব সমন্বয় তা সুখিয়া-দুখিয়া ঘেরা মাতামুহুরী নদীর অববাহিকা না দেখলে কখনও বুঝা যাবেনা। মাতামুহুরী নদী পাহাড়ি খরস্রোতের নদী হলেও এই অংশের পানি সবসময় স্থির। বর্ষায় ঘোলা ও শুস্ক মৌসুমে স্বচ্ছ পানি আপনাকে আকৃষ্ট করবে। এখানে ভ্রমনের নৌকায় একমাত্র বাহন হিসেবে ব্যাবহার হয়। আরো আছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থমান হিসেবে পরিচিত সাবেক বিলছড়ি মহামুনি বৌদ্ধ বিহার। নৃ-গোষ্ঠী মার্মা-ত্রিপুরা মুরুংদের জীবন বৈচিত্র।

চকরিয়া-লামা সড়কের মাঝপথে মেঘ ঘেঁষা পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য্য মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স। মিরিঞ্জা টপ নামক স্থানে পর্যটনটি অবস্থিত। উপজেলা সদর হতে ৭ কিলোমিটার, চকরিয়া হতে ২২ কিলোমিটার দূরে ও সমুদ্র পৃষ্ট হতে প্রায় ২ হাজার ২৫০ ফুট উপরে এর অবস্থান। যেখানে দাঁড়িয়ে পাহাড়, সমুদ্র ও দিগন্ত একসাথে দেখা সম্ভব। আকাশের ভেলার মত ভাসমান মেঘ আপনাকে ঘিরে ধরবে। মিরিঞ্জায় দলবল নিয়ে রান্না করে খাওয়ার পাশাপাশি বনভোজন করার সু-ব্যবস্থা রয়েছে। তাছাড়া পরিবার নিয়ে অনেকক্ষণ সময় কাটানোর মত একটি আদর্শ জায়গা।

মিরিঞ্জা পাড়া; ভোর বেলা এই পাড়া থেকে দেখতে পাবেন আপনি অনেক গুলো পাহাড়ের উপর আছেন যা কিনা আপনার নিচে অবস্থান করছে। তাছাড়া সাথে তো কুয়াশা ভরা ছোট ছোট বাড়ি গুলোর দেখাতো পাবেনই। ফলে এই জায়গা টাকে সাজেক বলা যায়। তার মানে আপনি এইখান থেকেই সাজেকের একটা ফিল পেয়ে যাবেন।

কিছুক্ষণ ভিউ পয়েন্ট, মিরিঞ্জা পাহাড়ের সর্বোচ্চ উঁচু হতে দাঁড়িয়ে লামার দিকজোড়া দিগন্তের দেখা মিলে,
মেঘ ও পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চলে আসুন কিছুক্ষণ ভিউ পয়েন্ট।

লামা পৌরসভার বীর বাহাদুর কানন ও তং থমাং রিসোর্ট, আধুনিকতা ও প্রকৃতির এক অনন্য সংমিশ্রণ। মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক বৈচিত্রময় প্রানীকুলের বিশাল সমারোহে শিশু, নবীন, প্রবীনদের ভালোলাগার মত একটি স্থান। যেখানে নানা প্রজাতির ফুল ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ দিয়ে পুরো পৌর আঙ্গিনাকে সাজানো হয়েছে। বাহারি ফুলের সাম্রাজ্যে ডানা ঝাপটে ইচ্ছে ঘুড়ির মত একফুল থেকে অন্য ফুলে উড়ে বেড়ায় প্রজাপতির দল। যা সাধারণ মানুষ সহ পর্যটকদেরও মন কাড়ে! বাঁধাই করা টলটলে পানির ফোয়ারা, এমনকি বাঘ-সিংহ, হাতি ও ডাইনোসরও আছে! তবে এগুলো প্রাণহীন; মাটি, বালু, সিমেন্টের ওপর ভাস্করের কারুকাজ। পাশাপাশি রাতের পৌর আঙিনায় আলোক সজ্জার সৌন্দর্যে বিমোহিত হবেন যে কেউ। এছাড়া পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তং থমাং রিসোর্ট এন্ড রেষ্টুরেন্টে শিশুদের জন্য রয়েছে নতুন সংযোজন খেলাঘর।

অনন্য রিসোর্ট লামা, মাতামুহুরি ডিগ্রী কলেজের একটু পর নুনারঝিরি রোড দিয়ে ১কি. ভেতরে নুনারঝিরি ঝর্ণার বিপরীতে ০.৪ কি.মি. উপরে পাহাড়ের চুড়ায় পৌঁছুলেই অনন্য রিসোর্ট লামা আপনাকে স্বাগত জানাবে। সবুজ গাছগাছালী, পাখির কলরব আর পাহাড়ের মেলবন্ধনের সাথে নিজেকে হারিয়ে ফেলা এবং শহরের কোলাহল ছেড়ে পাহাড়ি ঝর্না, গ্রাম সংস্কৃতি আর মাতামুহুরী নদীর সুন্দর প্রকৃতির খুব কাছাকাছি আশার সুযোগ এ যেন পল্লী কবি জসীম উদ্দীনের নিমন্ত্রণ কবিতার বাস্তব উদাহরণ।

এছাড়া দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ করতে পারে এমন ৫টি পাহাড়ি ঝর্ণা রয়েছে। বিশেষ করে বর্ষায় জলধারার অবিরাম পতনে সৃষ্ট নিক্কন ধ্বনিসমেত অপরূপ দৃশ্য না দেখলে কল্পনায়ও সে ছবি আঁকা অসম্ভব। ঝর্ণার প্রকৃত সৌন্দর্য্য দেখা মিলে বর্ষায়। তখন ভরা যৌবনে থাকে ঝর্ণা গুলো। ১। কেয়াং ঝিরি (হিমখোলা) ঝর্ণা, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বেগুনঝিরি এলাকায় কেয়াং ঝিরি ঝর্ণাটি অবস্থিত। স্থানীয়রা এই ঝর্ণাটিকে হিমখোলা ঝর্ণাও বলে। ২। নুনারঝিরি ঝর্ণা, লামা সরকারি মাতামুহুরী কলেজের পশ্চিমপাশে নুনারঝিরি এলাকায় এই ঝর্ণাটি অবস্থিত। কলেজ সংলগ্ন মেইন রোড হতে নুনারঝিরি রাস্তা দিয়ে প্রথমে প্রায় ১ কিলোমিটার গাড়িতে ও তারপর আধা কিলোমিটার হেঁটে ঝর্ণাটির দেখা মিলবে। ৩। আইম্মারা ঝিরি ঝর্ণা, লামা বাজারের পশ্চিম পাশে দুখিয়া-সুখিয়া পাহাড়ের পাদদেশে এই ঝর্ণাটি অবস্থিত। বাজারের নদীর ঘাট হতে নৌকা করে দুখিয়া পাহাড়ের পাদদেশে গিয়ে নেমে প্রায় আধা কিলোমিটার হেঁটে ঝর্ণাটিতে পৌঁছাতে হয়। বড় বড় পাথরের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত স্বচ্ছ পানি আপনাকে যে প্রশান্তি দেবে, তা সরজমিনে না গেলে বুঝিয়ে বলা অসম্ভব। বাহিরের পর্যটকরা যাওয়ার সময় গাইড বা নৌকার মাঝিকে সঙ্গে নিলে ভাল হয়। ৪। মিঝঝিরি ঝর্ণা, আইম্মারা ঝিরি ঝর্ণা হতে মাতামুহুরী নদী হয়ে নৌকায় করে আরো ৩/৪ কিলোমিটার নিচে গেলে এই ঝর্ণাটির দেখা মিলবে। ৫। মিরিঞ্জা ঝর্ণা, লামা-চকরিয়া সড়কে যাওয়া আসার পথে মিরিঞ্জা পাহাড়টির দেখা মিলবে। অবস্থানগত দিক থেকে সম্পূর্ণ পাহাড়টি ৩নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে অবস্থিত। অনেক বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে পাহাড়টির অবস্থান। মিরিঞ্জা পাহাড়ে ঐবক পাড়া, মিরিঞ্জা টপ, বাগান পাড়ার নিচে বেশ কয়েকটি ঝর্ণা দেখা যায়। বিশেষ করে বর্ষাকালে ঝর্ণা গুলো বেশী পরিলক্ষিত হয়। পাহাড়ে গাছ না থাকায় শুস্ক মৌসুমে ঝর্ণা গুলো তার চিরচেনা যৌবন হারায়। বিশাল বিশাল পাথরের বেস্টিত ঝর্ণা গুলো। যে সকল ভ্রমণ পিপাসু মানুষ চ্যালেঞ্জ নিয়ে ঘুরতে ভালবাসেন তাদের অধিক আনন্দ দিবে মিরিঞ্জার ঝর্ণা গুলো।

ভ্রমণ পিপাসুদের তৃষ্ণা মেটাতে দেরি না করে এখনই পরিকল্পনা করে ফেলুন আর ঘুরে আসুন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি লামা থেকে। এই শহরে দু’কদম হাটলেই বিভিন্ন রেষ্টুরেন্ট, ক্যাফে, হোটেলে খাবার জুটে। আর রাত্রি যাপনের জন্য রয়েছে মানসম্মত আবাসিক হোটেল সী-হীল, জেলা পরিষদ রেস্ট হাউস, তং থমাং রিসোর্ট, অনন্য রিসোর্ট, হোটেল মিরিঞ্জা, হোটেল প্রিজন, হোটেল কোহিনুর, পলাশ বোডিং, হোটেল গার্ডেন। ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম থেকে বাসে চকরিয়া পর্যন্ত। এরপর চকরিয়া থেকে বাসে কিংবা চাঁদের গাড়িতে করে লামা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট