কক্সবাজারের টেকনাফে আদালতের আদেশে মৃত্যুর ১৩ দিন পর কবর থেকে এক শিশুর মৃতদেহ উত্তোলন করেছে পুলিশ। যাকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে সৎ মাকে আসামি করে ভুক্তভোগী ওই শিশুটির এক মামা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) দুপুরে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সাতঘরিয়া পাড়ার স্থানীয় কবরস্থান থেকে শিশুটির মৃতদেহ উত্তোলন করা হয় বলে জানান টেকনাফ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ আল ফারুক।
নিহত মো. ফাহিম (৩) টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সাতঘরিয়া পাড়ার মো. হেলাল উদ্দিনের ছেলে। মামলার প্রধান আসামি শাকিলা আক্তার নিহত শিশুর সৎ মা।
মামলার নথির বরাতে এসআই আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ভুক্তভোগী শিশু মো. ফাহিমের মা রোকেয়া বেগম গত দেড় বছর আগে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর গত বছরখানেক আগে তার বাবা সৎ মা শাকিলা আক্তারকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই সৎ মা তার সৎ সন্তানদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে।
“মামলার বাদীসহ স্থানীয়রা জানিয়েছে, ৩ মাস আগে ফাহিমের বাবা হেলাল উদ্দিন সৌদি আরবে চাকুরি করতে যান। বাবার অনুপস্থিতিতে সৎ সন্তানদের উপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। ”
নথির তথ্য উল্লেখ করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বাড়িতে শিশু ফাহিমের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। ওইদিনই তড়িঘড়ি করে শিশুটির মৃতদেহ স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরে শিশুটির মৃত্যুর দুইদিন পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ আলমগীর বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগে সৎ মা শাকিলাকে প্রধান আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয় আরও ৪ জনকে। ”
আব্দুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ” গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলাটি তদন্তের স্বার্থে শিশুটির মৃতদেহ কবরস্থান থেকে উত্তোলন করে সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়। ওইদিন আদালত মৃতদেহটি উত্তোলন করার আদেশ দেন। ”
“মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের আদেশে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সাতঘরিয়া পাড়ার স্থানীয় কবরস্থান থেকে মো. ফাহিমের মৃতদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ”
মামলার এ তদন্ত কর্মকর্তা জানান, কবরস্থান থেকে শিশুটির মৃতদেহ উত্তোলনের পর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। পরে বিকালে ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।