পাহাড়ের কথা ডেস্ক |
চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলায় আগামী ১৮ জুন ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের ক্যাম্পেইনে জেলার ৮ লাখ ২০ হাজার ৪৮০ শিশুকে ভিটামিন-এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারের ক্যাম্পেইনে ১৫ উপজেলার ২০০ ইউনিয়নের ৬০০ ওয়ার্ডে এ কার্যক্রম চালানো হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে জেলা পর্যায়ের সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ওয়াজেদ চৌধুরী অভি, এমওডিসি ডা. নুরুল হায়দার, স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া প্রমুখ।
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, এবার ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন ১৫ থেকে ১৮ জুনের মধ্যে হওয়ার কথা ছিল। যার কারণে অনেক জায়গায় ইতিমধ্যে ক্যাম্পেইন শুরু হয়ে গেছে। চট্টগ্রাম জেলায় আগামী ১৮ জুন ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। ঐ দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত জেলার স্থায়ী, ভ্রাম্যমাণ ও অস্থায়ী কেন্দ্রে ৬-১১ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লক্ষ আই.ইউ) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লক্ষ আই.ইউ) খাওয়ানো হবে। জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন চলাকালীন সময়ে জেলার ১৫ উপজেলায় ২’শ ইউনিয়নের ৬’শ ওয়ার্ড, ১৬টি স্থায়ী কেন্দ্র, ১৫টি ভ্রাম্যমান কেন্দ্র ও ৪ হাজার ৮’শ অস্থায়ী কেন্দ্রে মোট ৮ লাখ ২০ হাজার ৪৮০ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তন্মধ্যে জেলায় ৬-১১ মাস বয়সী ৯৪ হাজার ৯১ জন শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লক্ষ আই.ইউ) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ৭ লাখ ২৬ হাজার ৩৮৯ জন শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লক্ষ আই.ইউ) খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন বলেন, গত ২০ ফেব্রæয়ারি জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৬-১১ মাস বয়সী মোট ৯১ হাজার ৯১৫ জন শিশুকে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লক্ষ আই.ইউ) খাওয়ানো হয়েছিল যার অর্জিত হার ৯৮ শতাংশ এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ৭ লাখ ১২ হাজার ৬৪৪ জন শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লক্ষ আই.ইউ) খাওয়ানো হয়েছিল যার অর্জিত হার ৯৯ শতাংশ। জেলার বাইরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিতব্য এ ক্যাম্পেইন সফল করতে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। আগামী ১৮ জুন রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উপজেলাগুলোতে ৫৪ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ২০০ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ৫৪০ জন স্বাস্থ্য সহকারী, ৭৪৮ জন পঃ পঃ সহকারী, ১৯৬ জন পঃ পঃ পরিদর্শক, ৯ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক, ১৫ জন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, ৫১১ জন সিএইচসিপি ও ৮৫ জন স্যাকমো জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে নিয়োজিত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুর অপুষ্টি, অন্ধত্ব প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত, হাম ও ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সকল ধরনের মৃত্যুর হার হ্রাস করে। পরিবারের রান্নায় ভিটাামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার শিশুর জন্য যথেষ্ট উপকারী। মা ও শিশুর পুষ্টির জন্য গর্র্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি করে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ খাবার খেতে দিতে হবে। শিশুর জন্মের সাথে সাথে মায়ের বুকের শাল দুধ খাওয়াতে হবে এবং ৬ মাস পর্যন্ত বুকের দুধ ছাড়া অন্য কিছু দেয়া যাবে না। শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে দুই বছর পর্যন্ত মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণমত ঘরে তৈরি পুষ্টি সমৃদ্ধ সুষম খাবার খাওয়াতে হবে। কোন শিশু ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো থেকে যাতে বাদ না যায় সে দিকে সবাইকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে। যদি কোন শিশু বাদ পড়ে থাকে তাহলে নিয়মিত টাকা কেন্দ্রে গিয়ে ভিটামিন এ প্ল্যাস ক্যাপসুল খাওয়াতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী শিশু লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮১ হাজার এবং ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৫৫ হাজার।