মো. নুরুল করিম আরমান |
একসময় পাহাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তামাক চাষ করে ক্ষতির সম্মুখীন হলে এখন অনেক চাষিই ইক্ষু চাষ করে জীবন নির্বাহ করতে শুরু করেছেন। ইক্ষু চাষের বিপুল সম্ভাবনা থাকায় কৃষকেরা এখন পাহাড়ের বিভিন্ন জমিতে ইক্ষু চাষ করছেন আর ভালো ফলন হওয়ায় বিক্রি করে লাভবানও হচ্ছেন। এ ধারাবাহিকতায় ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সুগারক্রপ চাষাবাদ জোরদারকরণ প্রকল্প’র উদ্বুদ্ধকরণে গত চার বছরে বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি -এ তিন পার্বত্য জেলায় ১হাজার ৪২৭ জন বিষবৃক্ষ তামাক চাষি ইক্ষু চাষে ফিরেছেন। এর মধ্যে বান্দরবান জেলায় ৭৬০জন, রাঙ্গামাটিতে ২৮৯জন ও খাগড়াছড়িতে ৩৭৮ জন চাষি রযেছেন। আখ উৎপাদন করেছেন ৩ লাখ ৩২হাজার ৮০০ মেট্রিক টন ও গুড় উৎপাদন করেন ৯২.৮ মেট্রিক টন। বৃহস্পতিবার প্রকল্পের কনসালটেন্ট কৃষিবিদ ক্যছেন এ তথ্য জানান। তিনি আরো জানান, মৃত্তিকা, পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর তামাক চাাষের বিকল্প হিসেবে ইক্ষু এবং সাথী ফসল চাষের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এতদ্বঞ্চলে। প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১-২২ অর্থ সালে।
এদিকে ইক্ষু চাষে ব্যাপক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বান্দরবান সদর উপজেলার চাষি মংবানু মার্মা ও লামা উপজেলার চাষি নাজমুল হাসান সমির এক সূরে বলেন, আগে তামাক চাষ করতাম। গত চার বছর ধরে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সুগারক্রপ চাষাবাদ জোরদারকরণ প্রকল্পের কর্মকর্তাদের উদ্বুদ্ধকরণে ইক্ষু চাষ করে আসছি। এতে ফলন ভালো হওয়ায় লাভবানও হয়েছি। তাই তামাক চাষের বিকল্প হিসেবে এ অঞ্চলে ইক্ষু এবং সাথী ফসল চাষে সফলতার মুখ দেখছি। এ চাষে আমরা আরো বেশি বেশি সহযোগিতা চাই। ইক্ষু চাষ সম্প্রসারণ ও আখের গুড় উৎপাদনের সুস্থ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারলে পুষ্টি চাহিদা পুরন ও জীবন মানের উন্নয়ন গড়বে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
সম্ভাবনাময় এ ইক্ষু চাষের উপর পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে গত বুধবার দিনব্যাপি বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কক্ষে এক কর্মশালাও অনুষ্ঠিত হয়। প্রকল্পের পরিচালক জাহিদ ইকবাল এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফা সুলতানা খান হীরামনি, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এম এম শাহ্নেয়াজ, বাংলাদেশ বেতার’র আঞ্চলিক পরিচালক মোস্তফা ছরোয়ার, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম। কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন দফতরের উর্ধতন কর্মকর্তা, সাত উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, প্রকল্পের জুনিয়র কনসালটেন্ট বসন্ত কুমার তংচংগ্যাসহ ইক্ষু চাষিরা অংশগ্রহণ করেন।
এ কর্মশালায় বক্তারা বলেন, পার্বত্য জেলার মাটি ও আবহাওয়া ইক্ষু চাষের উপযোগী। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় প্রতিবছরে গুড়ের চাহিদা ১২০-১৩০ টন। কিন্ত এ এলাকায় উৎপাদিত হচ্ছে মাত্র ২০ মে. টন থেকে ২৫ মে. টন। পার্বত্য চট্টগ্রামের গুড়ের চাহিদা মেটাতে কৃষকদের সাথী ফসল হিসেবে ইক্ষু চাষের প্রতি আরো মনোযোগী হতে হবে। এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করবে বলেও জানান বক্তারা।
প্রধান সম্পাদক : বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রিয়দর্শী বড়ুয়া, প্রকাশক : প্রদীপ কান্তি দাশ, সম্পাদক : মো. নুরুল করিম আরমান, আইন বিষয়ক উপদেষ্ঠা : এ্যডভোকেট ফয়সাল আজিজ।
সম্পাদকীয় কার্ষালয় : প্রেসক্লাব ভবন (দ্বিতীয় তলা), প্রধান সড়ক, লামা পৌরসভা, বান্দরবান
ই-মেইল paharerkatha@gmail.com, মোবাইল: ০১৭৫০৪৪৪৯৯৬/০১৮১৪৮৪৫০৭৩
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত