বিষয়টি নিশ্চিত করে ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (আইন) মো. খলিলুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই আইনের অধীনে সরকার প্রত্যেক জমির মালিককে ‘ভূমির মালিকানা সনদ’ দেবে। ভূমির মালিকানা নির্ধারণে এই সনদ চূড়ান্ত দলিল হিসেবে গণ্য হবে। এই সনদের মাধ্যমে সহজেই ওই জমিসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করা যাবে। ভূমির ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আইনের খসড়াটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলেছে, অনুমোদনের জন্য শিগগির খসড়াটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। এই আইন তিন পার্বত্য জেলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, জমি হস্তান্তরের পর নামজারির মাধ্যমে রেকর্ড হালনাগাদ করা বা সিএলও বা সনদ তৈরি করে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হবে।
মালিকানা ও স্বত্ব পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ভূমির মালিকানা সনদও নিয়মিত হালনাগাদ করা হবে। এর জন্য সরকারকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিতে হবে জমির মালিককে। ভূমি হস্তান্তর দলিল বা ওয়ারিশান বা আদালতের আদেশ বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের আদেশে স্বত্ব ও মালিকানা প্রতিষ্ঠার পর বা জরিপে প্রণীত রেকর্ডের পর বিদ্যমান আইনে ভূমির স্বত্ব ও মালিকানা প্রতিবছর নবায়ন করার বিধান না থাকায় খাজনা পরিশোধের বিনিময়ে যে দাখিলা দেওয়া হয়, তা মালিকানার ধারাবাহিকতা বহাল থাকার অফিশিয়াল প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে।
খসড়ায় কৃষিজমি অধিগ্রহণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারের জরুরি উন্নয়নমূলক কাজে কৃষিভূমির প্রয়োজন হলে অপেক্ষাকৃত অনুর্বর জমি নির্বাচন করতে হবে। দুই বা তিন ফসলি জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না। জনস্বার্থে প্রয়োজন হলে দুই বা তিন ফসলি জমি অধিগ্রহণ করতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। জমি দুই না তিন ফসলি, তা নিয়ে মতভেদ দেখা দিলে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার সমন্বয়ে গঠিত কমিটি সিদ্ধান্ত দেবে।
ভূমির শ্রেণিবিন্যাস প্রসঙ্গে খসড়ায় বলা হয়েছে, স্যাটেলাইট ইমেজ ধারণের মাধ্যমে সরকার ভূমির ব্যবহারভিত্তিক অঞ্চল নির্ধারণ করে ডিজিটাল ম্যাপ প্রণয়ন করবে। জমির ব্যবহারভিত্তিক মাটির গুণ, প্রকৃতি ও ব্যবহার বিবেচনায় কৃষি, অকৃষি, আবাসিকসহ ভূমির নানা শ্রেণিবিন্যাস করা হবে। সরকারের অনুমতি ছাড়া কোনো জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। তবে ব্যক্তিমালিকানার জমির এক বিঘা পর্যন্ত শ্রেণি পরিবর্তনে সরকারের অনুমতির প্রয়োজন হবে না। এর ব্যত্যয় হলে এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হবে। সূত্র: আজকের পত্রিকা