শামীম ইকবাল চৌধুরী,নাইক্ষ্যংছড়ি |
রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নে মোহাম্মদ ফুরকান (১৭) নামে এক শিক্ষার্থীর মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টায় বটতলী চত্ত্বরে স্থানীয় সচেতন মহল ও স্কুল শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শতাধিক লোকজন অংশ নেয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন- মোহাম্মদ ফোরকান গর্জনিয়ার পশ্চিমবোমাংখিল গ্রামের দিনমজুর ছৈয়দ আলমের ছেলে। গর্জনিয়া উচ্চবিদ্যালয় থেকে সদ্য এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের আশায় মোবাইলের কাজ শিখতে যান গর্জনিয়া বাজার জাহিদ টেলিকমে। ঘটনার দিন গেল ২৯ জুলাই তাঁর মালিক আমির বকসুর ছেলে জাহিদ হোসাইন তাকে মুঠোফোনে জানান একটা টাকার ব্যাগ আসবে সেটা ড্রয়ারে রাখার জন্য। কথা অনুযায়ী রাখেনও সে। কিন্তু অল্পক্ষণ পর সেই দোকানে হানা দেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তারা ড্রয়ার থেকে ব্যাগটি বের করে তল্লাশি চালিয়ে দশ হাজার পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। আটক করে নিয়ে যায় দোকানের কর্মচারী ফুরকানকেও। “দোকানের মালিককে আটক না করে কোন ধরণের যাচাই-বাছাই ছাড়া নিরহ শিক্ষার্থীকে আটক সম্পূর্ণ অন্যায় বলে দাবি করেন তারা”।
মানববন্ধনে ফুরকানের বাবা ছৈয়দ আলম বলেন- ‘আমার ছেলের কোন অপরাধ নেই। দোকানের মালিকের কথা মত ব্যাগটা সে রেখেছে। ব্যাগে কি ছিল সেটা মালিকই জানতো। আটক করলে মালিককে করতো; তা না করে আমার ছেলেকে আটক করেছে। বিনাঅপরাধে ছোট ছেলেটি এখন কারাগারে। তার নি:শ্বর্ত মুক্তি চাই’। ফুরকানের চাচা আবুল কালাম বলেন- এক ভাই চার বোনের মধ্যে ফুরকান তৃতীয়। মোবাইলে কাজ শিখতে গিয়ে ইয়াবা ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে আটক হওয়ার পর থেকে ফুরকানের মা আনোয়ারা বেগম নির্ঘুম রাত পার করছে। ঠিক মত খাওয়া-ধাওয়াও করছে না।
গর্জনিয়ার পশ্চিমবোমাংখিল গ্রামের বাসিন্দা প্রাইমারী প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম বলেন- ‘ফুরকানের ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। ভবিষ্যৎ ঠিক করতে গিয়ে এখন তাঁর ভবিষ্যৎতটাই নষ্ট হয়ে গেল! ঘটনাটি অধিকতর তদন্ত করে বিনাঅপরাধে কারাগারে থাকা শিক্ষার্থী ফোরকানকে মুক্তি দিয়ে প্রকৃত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে হবে।’ জানতে চাইলে কক্সবাজার মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক (এডি) সিরাজুল ইসলাম মুকুল বলেন- ‘শিশু ছেলেটি যদি নিরপরাধ হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত আবেদন দিলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করা হবে।’ অভিভাবকেরা সচেতন না হওয়ার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।