রাঙামাটি প্রতিনিধি |
রাঙামাটির লংগদুতে ৯ সেপ্টেম্বর পাকুয়াখালী গণহত্যা দিবসের স্মরণে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ লংগদু উপজেলা শাখার উদ্যােগে শোক র্যালী দোয়া মুনাজাত ও শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লংগদু উপজেলা সদরে শোক র্যালি করে প্রধান সড়ক ঘুরে এসে মাঠে পাকুয়াখালীতে নিহত গণ কবরের সামনে দোয়া, মুনাজাত ও শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ লংগদু উপজেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব আলমগীর কবির, রাঙামাটি জেলা সভাপতি শাব্বির আহম্মেদ, খাগড়াছড়ি জেলা সদস্য সচিব এসএম মাসুম রানা, লংগদু উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন, পিসিএনপি লংগদু উপজেলা সাধারণ সম্পাদক এবিএস মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন, ৩৫ কাঠুরিয়া পরিবারের শহীদ আলাউদ্দিনের সন্তান রাকিব হোসেন, প্রত্যক্ষদোষী মো. হাকীম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা সভাপতি মো. হাবীব আজম, কলেজ আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম, পৌর সভাপতি পারভেজ মোশারফ সহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী মজিব বলেন, পাবর্ত্য চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস’র সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনীর হাতে অসংখ্য বর্বরোচিত, নারকীয় ও পৈশাচিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে পাবর্ত্য অঞ্চলের বাঙালিরা। অসংখ্য ঘটনার মধ্যে আজ শনিবার পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে একটি নৃশংসতম বর্বর গণহত্যা দিন, পাকুয়াখালী ট্রাজেডি দিবস।
১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পিসিজেএসএস এর সশস্ত্র শাখা শান্তিবাহিনী কর্তৃক রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলার পাকুয়াখালীতে নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াদের ওপর নিমর্ম নিযার্তনের পর হত্যাকান্ড চালিয়ে তাদের বীভৎস মানসিকতার এক জঘন্যতম জিংঘাসার স্বরূপ উন্মোচন করে। পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ইতিহাসে এই দিনটি একটি নৃশংসতম বর্বর গণহত্যার দিন। এই দিনে ৩৫ জন নিরীহ বাঙালি কাঠুরিয়াকে নিমর্মভাবে হত্যা করেছিল শান্তি বাহিনী। তাদের ক্ষত-বিক্ষত, বিকৃত লাশের নিমর্ম দৃশ্য দেখে সেদিন শোকে ভারী হয়ে ওঠেছিল পরিবেশ। হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, দা-দিয়ে কুপিয়ে এবং বন্দুকের বেয়নেট ও অন্যান্য দেশি অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নানাভাবে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছিল সেদিন অসহায় ওই মানুষগুলোকে। প্রতিটি লাশকেই বিকৃত করে সেদিন চরম অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে শান্তিবাহিনী।
বক্তারা বলেন, মানবাধিকার এবং ন্যায়ের ভিত্তিতে পাবর্ত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই পাকুয়াখালী গণহত্যাসহ পাহাড়ে সকল বাঙালি গণহত্যাকান্ডের তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করা প্রয়োজন। অন্যথায় পাবর্ত্যাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার আশা কোনোদিনই সফল হবে না। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ও সম্প্রীতি রক্ষায় সশস্ত্র অবৈধ অস্ত্রধারী ও দেশদ্রোহী সন্ত্রাসী সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামে গণহত্যার দায়ে খুনি সন্তু লারমা ও প্রসীত খীসা সহ তাদের সংগঠনের সকল সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূল শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।