চন্দনাইশ প্রতিনিধি |
উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নির্দেশনায় বদলে গেছে হাসপাতালের রূপ। উন্নত সেবা ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আস্থা ফিরেছে রোগীদের। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট চন্দনাইশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে বেসরকারি অর্থায়নে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিচের একটি কক্ষে অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিয়ে স্থাপন করা হয়েছে অক্সিজেন প্লান্ট। সেখান থেকে ৫০টি বেডে অক্সিজেন সরবরাহ করা যাবে। এ ছাড়া ওয়ার্মার, কার্ডিয়াক মনিটর, ওটি লাইট, লেবার বেড, হ্যান্ড ল্যাম্প, হুইল চেয়ার, ইসিজি ও সাকার মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। করোনাকালীন সময় তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহীন হাসান চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ক্যাপ্টেন ফয়সাল আজিমের ব্যবস্থাপনায় ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পুরাতন ভবন সংস্কার করে পুরো হাসপাতাল ক্যাম্পাস টাইলস লাগানোর পাশাপাশি অত্যাধুনিক সিট স্থাপন করা হয়। একই সময় সিআইপি আবু তাহের রাজুর ব্যবস্থাপনায় শিশু ওয়ার্ডে আধুনিক ২০ টি সিট স্থাপন করা হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা এক্স-রে মেশিন এবং সার্জারি কার্যক্রমও চালু হবে শীঘ্রই। পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়েছে সিসি ক্যামেরার আওতায়। একটি অ্যাম্বুলেন্স সার্বক্ষণিক রোগীদের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে। সংযোজন করা হয়েছে শিশু ওয়ার্ড, জরায়ু, স্তন, ক্যান্সার ও ভিআইএ পরীক্ষা বিভাগ। ভিআইএ পরীক্ষা বিভাগে উন্নতমানের মেশিনে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে যে কোনো নারী ৫ বছর পর পর পরীক্ষা করতে পারবেন। মাতৃ স্বাস্থ্য ভাউচার স্কিম হেলথ এমআইএস আওতায় গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে উপজেলার দরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের বিনা খরচে নরমাল ও সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রকল্প চালু রয়েছে। আই ভিশন কর্নারে চক্ষু পরীক্ষা করে বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হয়। এছাড়াও এনসিডি কর্নারে প্রেসার, ডায়াবেটিস, হার্ট, অ্যাজমা রোগীদের জন্য বিনামূল্যে ১ মাসের ওষুধ প্রদান, ২৪ ঘণ্টাই জরুরি বিভাগ, প্যাথলজি সেবা, বিনামূল্যে মজুদ থাকা সাপেক্ষে ৯৭ প্রকারের ওষুধ, ইনজেকশন সরবরাহ করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা সাবিনা ইয়াছমিন বলেছেন, বর্তমান চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত চিকিৎসকেরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আধুনিক ও উন্নত সেবা পাচ্ছি, বিনামূল্যে ওষুধ দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি একটি অত্যাধুনিক হাসপাতালে পরিণত হয়েছে। তবে এখন দরকার চিকিৎসকদের আন্তরিকতার সহিত রোগীদের সেবা দেয়া।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু রাশেদ মো. নুর উদ্দীন বলেছেন, প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা শিশু, নারীসহ সকল রোগীকে যতœসহকারে চিকিৎসা সেবা প্রদানসহ বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ফজলুল করিম বলেছেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও বিভিন্ন উন্নতমানের রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রপাতি রয়েছে। সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরীর প্রচেষ্টায় পৃথক পৃথক অপারেশন কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। একটিতে মহিলাদের ডেলিভারি অপরটিতে অন্যান্য অপারেশন করার জন্য পৃথক পৃথক এসি স্থাপন করে সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। কিছু কিছু রোগী বেসরকারিভাবে সূর্যের হাঁসি ক্লিনিক ও বিজিসি ট্রাস্ট হাসপাতালে ডেলিভারি রোগীদের নিয়ে যাচ্ছে।