কক্সবাজার প্রতিনিধি |
বঙ্গোপসাগর থেকে ফেরার পথে টেকনাফের নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে দুটি ট্রলারসহ আরও ১৪ জেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ট্রলার মালিকদের অভিযোগ, এই অপহরণের সঙ্গে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা জড়িত। রোববার দুপুরে দুটি ট্রলারসহ আরও ১৪ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিয়ষটি নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ কায়ুকখালী বোট মালিক সমিতির পরিচালক সাজেদ আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া কিছু ট্রলার ঘাটে ফিলছিল। এসময় আরাকান আর্মি সদস্যরা আমাদের ঘাটের দুটি ট্রলারসহ ১৪ মাঝিমাল্লাহকে ধরে নিয়ে গেছে। এ ধরনের ঘটনায় মাছ ব্যবসায়ীসহ জেলেদের মাঝে ভয়ভীতির সৃষ্টি হয়। তাই এ ধরনের ঘটনায় সরকারের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।’
এর আগে শনিবার দুপুরে টেকনাফ ফেরার পথে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে ১২ জেলেসহ একটি নৌকা ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। জেলারা হলেন, মো. আলি আহমদ (৩৯), মোহাম্মদ আমিন (৩৪), ফজল করিম (৫২), কেফায়েত উল্লাহ (৪০), সাইফুল ইসলাম (২৩), সাদ্দাম হোসেন (৪০), মো. রাসেল (২৩), মো. সোয়াইব (২২), আরিফ উল্লাহ (৩৫), মোহাম্মদ মোস্তাক (৩৫), নুরুল আমিন (৪৫)। আরেকজনের নাম জানা যায়নি। তারা সবাই টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা।
এসব তথ্য নিশ্চত করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘আরও দুটি ট্রলারসহ ১৪ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পাচ্ছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। গতকাল নৌকাসহ ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনী কাজ করছে।’
ট্রলার মালিক সমিতির নেতা আবুল কালাম বলেন, ‘আরও দুটি ট্রলারসহ ১৪ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। এর কারণে ভয়ের মধ্যে আছেন জেলেরা। প্রায় সময় এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।’
বিজিবি বলছে, গত আট মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমারে নাফ নদসহ সংলগ্ন এলাকা থেকে অন্তত ২৪০ জেলেকে অপহরণ করে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে চলতি বছরের মার্চ থেকে ২৩ আগস্ট মাস পর্যন্ত অপহৃত হন ১৮০ জন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সহায়তায় এদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে কয়েক দফায় ফেরত আনা হয়। সর্বশেষ গতকাল শনিববার দুপুরে সাগরে মাছ শিকার শেষে ফেরার পথে নৌকাসহ ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। যার ফলে ভয়ে মাছ শিকারে যাওয়া অনেক জেলে কূলে ফিরে এসেছে