পাহাড়ের কথা ডেস্ক।
বান্দরবানে অক্সিজেন সংযোগে বিলম্বের কারণে ইমানুয়েল মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে রিমা ত্রিপুরা (৩০) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে বান্দরবান ইমানুয়েল মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
রিমা ত্রিপুরা বান্দরবানের কুহালং ইউনিয়নের জর্দান পাড়া এলাকার মইথেরা ত্রিপুরার স্ত্রী। রিমা ত্রিপুরা তিন সন্তানের জননী ছিলেন। তার একটি ছয় মাস বয়সী বাচ্চা রয়েছে।
রিমা ত্রিপুরার স্বজনরা জানান, শুক্রবার রাতে শ্বাসকষ্ট ও মাথার সমস্যা নিয়ে রিমা ত্রিপুরাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার অক্সিজেন শেষ হয়ে গেলে স্বজনরা নার্স ও চিকিৎসকদের ডাকাডাকি করেন। তবে দ্রুত কোনো সাড়া মেলেনি। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর নার্স এসে অক্সিজেন সংযোগ দেওয়ার পরই রিমার মৃত্যু হয়।
মৃতের পিসতুত ভাই ইছাধন ত্রিপুরা বলেন, “রোগীর প্রতি অবহেলা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কোনো মায়া ছিল না। যেভাবেই হোক এই ভুলের একটি ফয়সালা চাই। যেহেতু রোগী মারা গেছেন, তাকে আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই আমার দাবি, এই ভুল স্বীকার করতে হবে। ভুলটি স্বীকার করে লিখিত বা ভিডিও আকারে একটি স্টেটমেন্ট দিতে হবে। যদি সেই স্টেটমেন্ট না দেওয়া হয়, তবে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
এদিকে, এ ঘটনায় ইমানুয়েল মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পারখুম লুসাই স্বাক্ষরিত এক লিখিত অঙ্গীকারনামায় হাসপাতালের ব্যর্থতা স্বীকার করেন।
তবে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ওই অঙ্গীকারনামা দেওয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থাপনার গাফিলতিজনিত মৃত্যুর ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এর আগেও এ হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে।
মৃতের পরিবারের কাছে দেওয়া অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করা হয়, ‘‘এই মর্মে দুঃখ ও শোক প্রকাশ করছি যে, অদ্য ২৩/০৮/২০২৫ খ্রি. তারিখ রোজ শনিবার, সময়- ১২:২০ ঘটিকায় অত্র প্রতিষ্ঠানে অক্সিজেন সংযোগ বিলম্বতার কারণে একজন মূমুর্ষ রোগীর মৃত্যু ঘটে। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আমি আমাদের ব্যর্থতা স্বীকার করছি এবং আমি এ বিষয়ে ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে এ ব্যপারে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করব।”
ইমানুয়েল মেডিকেল সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পারখুম লুসাই বলেন, “আমাদের হাসপাতালে উপরতলায় রোগী বেশি। প্রায় সব রোগীর অবস্থাই সংকটাপন্ন। নিচতলা থেকে গ্যাস সিলিন্ডার উপরতলায় তোলার সময় ওই রোগীর মৃত্যু ঘটে। আসলে রোগীটি বাঁচার মতো অবস্থায় ছিলেন না। মানবিক কারণে আমরা তাকে ভর্তি নিয়েছিলাম। মৃত পরিবারের সন্তুষ্টির জন্যই আমরা অঙ্গীকারনামা দিয়েছি। এছাড়া মৃত পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ নেই।”
এ বিষয়ে বান্দরবান সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, “এখন পর্যন্ত কেউ লিখিতভাবে অভিযোগ দেয়নি। তবে ভুক্তভোগীর পরিবার অভিযোগ আকারে লিখিত আবেদন করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপরও আমরা বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখব।” সূত্র- শীর্ষ নিউজ ডটকম
প্রধান সম্পাদক : বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রিয়দর্শী বড়ুয়া, প্রকাশক : প্রদীপ কান্তি দাশ, সম্পাদক : মো. নুরুল করিম আরমান, আইন বিষয়ক উপদেষ্ঠা : এ্যডভোকেট ফয়সাল আজিজ।
সম্পাদকীয় কার্ষালয় : প্রেসক্লাব ভবন (দ্বিতীয় তলা), প্রধান সড়ক, লামা পৌরসভা, বান্দরবান
ই-মেইল paharerkatha@gmail.com, মোবাইল: ০১৭৫০৪৪৪৯৯৬/০১৮১৪৮৪৫০৭৩
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত