সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এই উৎসবকে ঘিরে জেলা শহর বান্দরবানের চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বিভিন্ন মন্দিরে দুর্গা প্রতিমাগুলোকে রাঙাতে শিল্পীরা ছুটে যাচ্ছেন একমণ্ডপ থেকে অন্য মণ্ডবে। শিল্পীর রঙ তুলির আচঁড়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে দেবীর রুপ।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, তাদের কাছে দেবী দুর্গা শক্তি ও সুন্দরের প্রতীক। প্রতিবছর অসুরের বিনাশ করতে মা দেবী দুর্গা এই ধরাধামে আবির্ভূত হয়। তাইতো সমাজ থেকে অন্যায়-অবিচার ও গ্লানি দুর করার জন্য এই পুজার আয়োজন। এই উদ্দেশ্য সামনে রেখে সারাদেশের মতো বান্দরবানের শুরু হতে যাচ্ছে দুর্গাপুজা।
কেন্দ্রীয় দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটি জানিয়েছে, এবছর বান্দরবানের ৭টি উপজেলাসহ ৩২টি পূজা মণ্ডবে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব। এর মধ্যে বান্দরবান সদরে ১১টি, লামা উপজেলায় ৮টি ,আলীকদম উপজেলায় ৬টি, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ৩টি, রুমা উপজেলায় ১টি, রোয়াংছড়ি উপজেলায় ১টি, থানচি উপজেলায় ২টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২০ অক্টোবর পূজা শুরু হবে। দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ২৪ অক্টোবর উৎসেবর সমাপ্তি ঘটবে।
বান্দরবান কেন্দ্রীয় দুর্গাপূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তাপস দাশ বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় পূজা মণ্ডপ তৈরী করা হয় বান্দরবান শহরের ঐতিহ্যবাহী রাজার মাঠে। মহাদেব শিবের তাপস্যার স্থান কৈলাস পর্বতের অনুসরণে এবার ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে পূজা মণ্ডপকে সাজানো হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় শেষের দিকে। শিল্পীর রঙ-তুলির আচঁড়ে মূর্ত হয়ে উঠেছে দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও দেব-দেবীর রুপ। পূজাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দেবী দুর্গাকে বরণ করতে সময় কাটাচ্ছেন। ঘরে ঘরে চলছে আনন্দ উৎসব ও পূজার প্রস্তুতি। তাছাড়া এবার দক্ষিণ চট্টগ্রামে সবচেয়ে তৈরি হচ্ছে আকর্ষণীয় পুজার মণ্ডপ। এই দেবী দুর্গাকে দেখতে স্থানীয় ও দর্শনার্থীরা প্রতিদিনই ভিড় করছেন। আধুনিক প্রযুক্তির কাজে লাগিয়ে দুর্গা প্রতিমা ছাড়াও তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন দেব-দেবীর অবয়ব।
জাতীয় হিন্দু মহাজোট চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন দাশ বলেন, ২০২১ সালে বান্দরাবনের লামায় দুর্গা পূজামণ্ডপে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। এবার যাতে এই রকম কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে প্রশাসন যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
এই ব্যাপারে বান্দরবান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, বান্দরবানের প্রতিটি পূজামণ্ডবে তিন স্থরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। দশমীর দিনে প্রতিমা বিসর্জন সুষ্টভাবে সম্পন্ন করা পর্যন্ত পুলিশের সদস্যদের দায়িত্বে থাকবে।