বান্দরবান প্রতিনিধি |
বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলায় গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মেসার্স ই কন্সট্রাকশন স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার হুমায়ুন কবিরে বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা। এসব অনিয়মের কাজে যোগসাজশে রয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিল্টন দস্তগীর। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাবে সড়কটির প্রাক্কলন অনুসারে কাজ না করার অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক দুইটি নির্মাণে বক্স কেটে অন্তত ৬ ইঞ্চি সেন্ট ফিলিংয়ের পর কম্পেকশন করার কথা। কিন্তু সেটি না করে কোন রকমে নদীর বালু দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সড়ক দুইটি কাজে নদীর বালু ব্যবহার করলেও সেটি কম্পেকশন করা হয়নি। বালু ব্যবহারে পাশাপাশি সড়কে কাজের নিম্নমানের ইট ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে নির্মিত সড়কটির স্থায়িত্ব নিয়ে আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
রোয়াংছড়ি উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (পিআইও) কার্যালয়ের তথ্যমতে, গ্রামীণ সড়ক বাস্তবায়নের ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে এক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে মেসার্স ই কন্সট্রাকশন স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার হুমায়ুন কবির। অনিয়মকে ঘিরে সড়ক কাজের গতি প্রায় ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তাছাড়া ইউনিয়নের ছাইগ্যা তেতুলিয়া পাড়া সড়কটি ইতিমধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আরো ৪০ শতাংশের কাজ চলমান রয়েছে। সড়কটি জুড়ে দেখা দিয়েছে ব্যাপক অনিয়ম আর দুর্নীতি চিত্র। ঝংকার বালু পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে সাঙ্গু খালের বালু। বালু স্তরটি চাপ দিয়ে শক্ত করার নিয়ম থাকলেও সেটি না করে উপর ইট বসানো হচ্ছে। আবার বসানো ইটগুলো নিম্নমানের সামাগ্রী। ইটের প্রথমস্থরটিতে ব্যবহার করা হচ্ছে ভাঙ্গা ইট। ইটের উপর পা দিলে ডেবে যাচ্ছে সড়কটি। আগামী বর্ষাতে সড়কটি যাতায়াতের অনুপযোগী হওয়া দেখা দিয়েছে।
সড়ক কাজে নিয়োজিত শ্রমিক ওমর ফারুক বলেন, আমরাও চাই সড়কটি উন্নতমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ হোক। কিন্তু ঠিকাদার কবির যেভাবে বলেছে আমরা সে ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
তারাছা ইউপি সদস্য মো. মোরশেদ জানান, সড়ক দুইটি নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে। অভিযোগের বিষয়টি উপজেলা কর্মকর্তাকে অবগত করা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয় মেসার্স ই কন্সট্রাকশন স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার হুমায়ুন কবিরে সাথে। তিনি জানান, নিয়ম অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। আর আমি ছোটখাটো ঠিকাদার অল্প টাকাতে ছোট কাজ করে যাচ্ছি। আর আমার সাথে যারা শেয়ার আছে তাদের কথা বলে আপনার ব্যাপারটা দেখতেসি।
রোয়াংছড়ি উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (পিআইও) কর্মকর্তা মিল্টন দস্তিদার বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগে কি হবে, তারা তো কাজ বুঝে না। কাজ ভালোমানের করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.সাইফুল ইসলাম জানান, দুইটি উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেছেন। সেখানে নিন্মমানের ইট ব্যাবহার করায় কাজ দুইটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে এসেছেন। কাজের মান ভাল না করলে এসব কাজ নতুন করে করাতে বাধ্য করবেন বলে জানান তিনি।