মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি |
সীমান্তবর্তী জেলা পার্বত্য খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে মানসিক প্রতিবন্ধীর সংখ্যা। উপজেলার তাইন্দং, তবলছড়ি, বর্ণাল, আমতলী, বেলছড়ি, গুমতি, মাটিরাঙ্গা সদরসহ ৭ টি ইউনিয়ন, ১ টি পৌরসভা, বিশেষ করে মাটিরাঙ্গা পৌর শহরে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মানসিক প্রতিবন্ধির সংখ্যা। ধারণা করা হচ্ছে সারা দেশের সাথে যোগাযোগ সুবিধা ও ভারতের পুসব্যাকের কারণে আশঙ্কাজনক হারে মানসিক প্রতিবন্ধীর সংখ্যা বাড়ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে উপজেলায় নিবন্ধিত ৯ টি বাজার ছাড়াও ছোট ছোট আরো বেশ কয়েকটি বাজার রয়েছে। এ সমস্ত বাজারে বিভিন্ন দোকানের সামনে, আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বারান্দা বিবস্ত্রাবস্থায় বিচরণ কিংবা শুয়ে থাকার দৃশ্য পরীলক্ষিত হয়। তাদের অস্বাভাবিক আচরন বিশেষ করে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা ভয় পায়। বড়দের লজ্জায় মাথা নিচু হয়।
উপজেলা ও পৌর ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা বানিজ্যিক এলাকাসহ বিভিন্ন দোকানপাটের সামনে বিবস্ত্র ও নোংরা শরীরে দেখা যায়। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে হাট-বাজার বা রাস্তা ঘাটে চলাফেরা করতে চরম বিব্রত পরিস্থিতে পরতে হয় সাধারণ মানুষকে।
খোলা যায়গায় জনসম্মুখে স্ত্রী-পুরুষ উভয় প্রকাশ্যে দিবালোকে মল ত্যাগ কিংবা প্রশ্রাব করে পরিবেশ নষ্ট করতেও দেখা যায়। অপরিষ্কার নোংরা শরীরের দুর্গন্ধ হতে বায়ুবাহিত রোগ জীবানু বাতাসে ছড়াচ্ছে। এতে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে।
এছাড়াও অভিভাবকহীন মানসিক প্রতিবন্ধীরা গ্রীষ্ম-বর্ষায় রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে কিংবা কনকনে শীতে দিনের পর দিন মানবেতরে জীবন যাপন করছে। পক্ষান্তরে সম্প্রতি মানসিক প্রতিবন্ধির সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে তাদের অনেকের আচার আচরণেরও পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে। যা সচেতন মহল সন্দেহের চোখে দেখছেন।
বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জনাব কামরুল ইসলাম বলেন, বছর খানিক পূর্বেও মানসিক প্রতিবন্ধী রোগীর সংখ্যা এত বেশি ছিল না। পাগলি আর শাহীন পাগলা ছাড়া কাউকে তেমন দেখিনি, বর্তমানে বাজারের আশঙ্কাজনক হারে মানসিক প্রতিবন্ধীর সংখ্যা বাড়ছে। মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে এদের জন্য কিছু করা উচিত।
মাটিরাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মো জাকারিয়া বলেন, ধারণা করা হচ্ছে পার্বত্য এলাকা মানষিক প্রতিবন্ধীদের জন্য নিরাপদ স্থান মনে করে সমতল হতে আন্ত:জেলা নাইটকোচ বিশেষ ঢাকা হতে ছেড়ে আসা রাতের গাড়িতে তাদের উঠিয়ে দেয়া হয়। ফলে নতুন করে মানসিক প্রতিবন্দীর সংখ্যা বেড়ে চলছে। এ ব্যাপারে সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারেন।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আশ্রাফ হোসেন বলেন, ঠিক কত সংখ্যক মানসিক প্রতিবন্ধী রয়েছে জানা নাই। তবে আপনাদের জানা থাকলে জানাবেন এবং আমাকে কেউ আবেদন করলে সরকারি প্রাপ্য সুবিধাদি দেওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা করবো।
মাটিরাঙ্গা ভারপ্রাপ্ত পৌর মেয়র মো. আলী বলেন, ইতোপুূর্বে সন্ধান পাওয়া সাপেক্ষে একাধিক মানসিক প্রতিবন্ধিকে তাদের স্বজনদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি মাটিরাঙ্গায় আশঙ্কা জনক হারে মানসিক প্রতিবন্ধির সংখ্যা বাড়ছে। তাদের অনেকের আচার আচরনণ সন্দেহজনক।
তারা প্রকৃত মানসিক প্রতিবন্ধি কিনা তা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহনে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মো. আলী আরেও বলেন, স্মাট বাংলাদেশ বিনির্মানে দেশের সকল মানসিক প্রতিবন্ধীদের জন্য জেলায় একটি করে শেল্টার হোম নির্মাণ করে তাদের মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার অধিকার ও নিরাপদ জীবন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
প্রধান সম্পাদক : বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রিয়দর্শী বড়ুয়া, প্রকাশক : প্রদীপ কান্তি দাশ, সম্পাদক : মো. নুরুল করিম আরমান, আইন বিষয়ক উপদেষ্ঠা : এ্যডভোকেট ফয়সাল আজিজ।
সম্পাদকীয় কার্ষালয় : প্রেসক্লাব ভবন (দ্বিতীয় তলা), প্রধান সড়ক, লামা পৌরসভা, বান্দরবান
ই-মেইল paharerkatha@gmail.com, মোবাইল: ০১৭৫০৪৪৪৯৯৬/০১৮১৪৮৪৫০৭৩
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত