রাঙামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নের আহসানপুর এলাকার সহস্র মানুষ গত চারদিন ধরে বিদ্যুৎ বিছিন্ন হয়ে আছে। বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষের স্বাভাবিক জনজীবন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা থেকে শুরু করে মানুষের দৈনন্দিন কাজ-কর্মে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত চার বছর আগে উপজেলার আহসানপুরে বিদ্যুৎ সেবা প্রত্যাশীদের জন্য ১০০ কেবি ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছিলো। তবে স্থানীয়ভাবে বিদ্যুৎ সেবা প্রত্যাশী বেড়ে যাওয়ায় লোড বেশি হওয়ার কারণে ট্রান্সফরমারটি বার বার নষ্ট হহো। বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ ট্রান্সফরমারটি কয়েকবার মেরামত করে আবারো নির্ধারিত জায়গায় প্রতিস্থাপন করে।
গত চারদিন আগে ১০০ কেবির ট্রান্সফরমাটি আবারো নষ্ট হয়ে পড়লে ওই এলাকার মানুষ বিদ্যুৎ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে। সেবা প্রত্যাশীরা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের কাছে বিষয়টি অবহিত করলে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে নিজেদের উদ্যোগে পরিবহন খরচ দিয়ে পুনরায় ১০০ কেবির একটি ট্রান্সফরমার দীঘিনালা থেকে নিয়ে যেতে হবে। লাগাতে সহযোগিতা করবে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ।
তবে স্থানীয়দের দাবি, যেহেতু স্থানীয় ভাবে বিদ্যুৎ সেবা প্রত্যশী সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পেয়েছে। সঙ্গত কারণে ১০০ কেবির ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপন করলে প্রয়োজনীয় লোড নিতে পারবে না, ফলে আবারও নষ্ট হবে। তাই, এলাকায় ২৫০ কেবির একটি ট্রান্সফরমার প্রয়োজন। তাহলে বিদ্যুৎ সমস্যা থেকে তারা পরিত্রাণ পাবে।
স্থানীয়দের এ দাবির ভিত্তিতে ২৫০ কেবির ট্রান্সফরমার প্রতি স্থাপনের জন্য বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে উৎকোচ হিসেবে দেড় লাখ টাকা দিতে হবে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
আহসানপুরের স্থানীয় বাসিন্দা শিক্ষক শাহ আহমেদ জামাল বলেন, আমাদের এলাকায় তিনশোর অধিক বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে। কিন্তু এখানে একটি ১০০ কেবির ট্রান্সফরমার লাগানো আছে। অতিরিক্ত লোডের কারণে কয়েকবার এ ট্রান্সফরমারটি নষ্ট হয়েছিলো। এইবারও ট্রান্সফরমাটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পুরো এলাকায় গত চারদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। যে কারণে পুরো এলাকার জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিদ্যুৎ বিভাগকে এ বিষয়ে বললে তারা আমাদের বলছে নিজেদের পরিবহন খরচ বহন করে ১০০ কেবির একটি ট্রান্সফরমার নিয়ে আসতে। তারা এসে লাগিয়ে দিবে। কিন্তু ১০০ কেবির ট্রান্সফরমার আবারো স্থাপন করলে অতিরিক্ত লোডের কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা ২৫০ কেবির একটি ট্রান্সফরমার চাচ্ছি।
বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের পক্ষ হয়ে উৎকোচ চাওয়ার অভিযোগ যার বিরুদ্ধে সেই সাইফুল ইসলাম, যিনি ইন্টারনেট ব্যবসা এবং মিটার স্থাপনের কাজ করেন। তিনি বলেন, আমার ইন্টারন্টে ব্যবসা আছে। বিদ্যুৎ না থাকায় আমার ব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তবে আমি কাউকে কোনো টাকা-পয়সার বিষয়ে বলিনি।
লংগদু উপজেলা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের উপ-সহকারী ইঞ্জিনিয়ার এরশাদ আলী বলেন, টাকা গ্রহণের বিষয়টি সত্য নয়। তবে আমরা বলেছিলাম, ১০০ কেবির একটি ট্রান্সফরমার লাগানোর জন্য। এইজন্য স্থানীয়রা নিজেদের খরচে পরিবহন করে ট্রান্সফরমারটি নিয়ে গেলে আমরা ওই এলাকায় গিয়ে স্থাপন করে দিবো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা ২৫০ কেবির ট্রান্সফরমার চাচ্ছে। এইজন্য আমি এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলেছি, তারা ব্যবস্থা নিবেন।
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী (আরই) নজরুল ইসলাম বলেন, আশা করছি, কয়েকদিনের মধ্যে এ সমস্যাটার সমাধান করা হবে। এলাকার মানুষ আগের মতো বিদ্যুৎ সেবা পাবে।
প্রধান সম্পাদক : বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রিয়দর্শী বড়ুয়া, প্রকাশক : প্রদীপ কান্তি দাশ, সম্পাদক : মো. নুরুল করিম আরমান, আইন বিষয়ক উপদেষ্ঠা : এ্যডভোকেট ফয়সাল আজিজ।
সম্পাদকীয় কার্ষালয় : প্রেসক্লাব ভবন (দ্বিতীয় তলা), প্রধান সড়ক, লামা পৌরসভা, বান্দরবান
ই-মেইল paharerkatha@gmail.com, মোবাইল: ০১৭৫০৪৪৪৯৯৬/০১৮১৪৮৪৫০৭৩
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত