নিজস্ব প্রতিবেদক |
আবুল খায়ের লীপ টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড’র বান্দরবান জেলার লামা উপজেলাস্থ ডিপো কার্যালয়ে ডাকাতির ঘটনায় লুন্ঠিত আরও ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে পৌরসভা এলাকার সাবেক বিলছড়ি সিলেিিট পাড়াস্থ পাহাড়ের চূড়ার একিিট হলুদ বাগানের মাটির নীচ থেকে এসব উদ্ধার করা হয়। শুধু তায় নয়, এ সময় তল্লাশী চালিয়ে মাটির নীচ থেকে ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ, ধারালো চাকু, কাটার ও টর্চ লাইট উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগেও পৃথক অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় পৌরসভা এলাকার সাবেক বিলছড়ি সিলেটি পাড়ার ডাকাত আব্দুল করিমের বাড়ি ও চকরিয়া উপজেলার শাহারবিল পাড়ার রুবেলের বাড়ি থেকে নগদ ৫১ লাখ ১৭ হাজার ২০০ টাকা। গ্রেফতার করা হয় ডাকাতি ঘটনার মাষ্টার মাইন্ড আব্দুল করিম, তার বাবা, সৎ মা, বোন, স্ত্রী, ভাইস সহ ৮জনকে। অভিযানে বান্দরবান পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল করিম, গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল আজম, লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তোফাজ্জাল হোসেন, উপ-পরিদর্শক আলমগীর হোসেন ও নুরুজ্জামান নেতৃত্ব দেন।
এদিকে ডাকাতির ঘটনার পর গত ১৩দিন ধরে পৌরসভা এলাকার সবখানে ছিল উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। ডাকাত আব্দুল করিম গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে সেই পরিস্থিতির অবসান হয়েছে। এবার স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে আসছে এলাকা। জনমনেও স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা পুলিশের এ সফল অভিযানের ভূয়শী প্রশংসা করেন।
সূত্র জানায়, গত ৯ মে দিনগত গভীর রাতে লামা পৌরসভার এলাকার লাইনঝিরিস্থ আবুল খায়ের লীপ টোব্যাকো কোম্পানির ডিপো কার্যালয়ে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই সময় ১৪-১৫ জনের মুখোশ পরা ডাকাত আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ও মারধর করে লকার থেকে ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৮ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার পরদিন ১০ মে কোম্পানির ডিপো ম্যানেজার আব্দুর রব বাদী হয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে বান্দরবান পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার এর দিক নির্দেশনায় পুলিশের একটি চৌকুস টিম তাৎক্ষনিক মাঠে নামেন। অল্প সময়ে একটি ফোন কলের সূত্র ধরে পুলিশের টিম অভিযান চালিয়ে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত আব্দুর রহিমসহ তিনজনকে প্রথম গ্রেফতার করেন। পরে রিমান্ডে নিয়ে জিঙ্গাসাবাদে আব্দুর রহিমের দেওয়া তত্থ্যের ভিত্তিকে আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের জিঙ্গাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারেও পাঠানো হয়। পরে ডাকাতি ঘটনার মাস্টার মাইন্ড আব্দুল করিমকে বুধবার (২১ মে) দিনগত রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতারের পর পুলিশ জিঙ্গাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল থেকে বিকাল ডাকাত আব্দুল করিমের বাবার বাড়ি সংলগ্ন পাহাড়ের হলুদ ক্ষেতে তল্লাশী চালিয়ে মাটি নীচ থেকে নগদ ৭০ হাজার টাকা, তিনটি আগ্রেয়াস্ত্র, ধারালো চাকু, কাটার, কার্তুজ ও টর্চ লাইট তুলেন। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও সরঞ্জামগুলো ডাকাত আব্দুল করিম লামা, চকরিয়া ও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে ডাকাতির কাজে ব্যবহার করেছেন বলে জানান, বান্দরবান পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডমিন এন্ড ফিনান্স) আব্দুল করিম।
এদিকে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) ও ডাকাতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এনামুল হক ভুঁইয়া বলেন, বান্দরবান পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় ডাকাতির ঘটনায় লুন্ঠিত অবশিষ্ট টাকা ও ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।