| নিজস্ব প্রতিবেদক |
বান্দরবান লামা উপজেলার মিরিঞ্জা টপ পর্যটন এলাকার মো. দুলাল মিয়া নামে এক ব্যক্তির জায়গা জবর দখলে নিতে প্রতিপক্ষ রিংরাও ¤্রাে পাহাড় ও বাগানের গাছ কেটে স্থাপনা নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একের পর এক আদালতের আদেশ উপেক্ষা করেই প্রতিপক্ষ স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে জায়গা জবর দখলের চেষ্টা করছেন বলে ভুক্তভোগী দুলাল মিয়া। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে, যে কোন মুহুর্তে আবারও ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা। জায়গা জবর দখলের হাত থেকে রক্ষা পেতে দুলাল মিয়া প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, মো. দুলাল মিয়া ও তার পিতা নুরুল ইসলামের নামে উপজেলার ২৯৩নং ছাগল খাইয়া মৌজার আর/২৬৭ ও আর/১৩১ মূলে মিরিঞ্জা এলাকায় ১০ একর তৃতীয় শ্রেণীর জায়গা আছে। বন্দোবস্তি পাওয়ার পর থেকে ওই জায়গায় বিভিন্ন ফলজ বনজ বাগান সৃজন করে ভোগ করে আসছেন তিনি। এর মধ্যে কিছু অংশ জায়গায় চংতাই মুরুং নামের এক ব্যক্তি নিজের জায়গা মনে করে কিছু গাছ বাগান সৃজন করেন। পরে ভুল বুঝতে পেরে গাছ বাগানের বিষয়ে ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী চংতাই মুরুং একটি নাদাবী নামা প্রদানের পাশাাপাশি ৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ গ্রহন করে জায়গা ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে দুলাল মিয়া ১৩১নং হোল্ডিং থেকে ৫০ শতক জমি পাশের ইনলাং ¤্রােকে লাগিয়ত দেন। সম্প্রতি এ জায়গার উপর পাশের রিংরাও ¤্রােদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। তারা এ জায়গা জবর দখল করার জন্য বিভিন্ন পায়তারা শুরু করেন। এ ধারাবাহিকতায় গত ১৫ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে প্রতিপক্ষরা খামার বাড়ি ভাংচুর ও ২০ আগস্ট লোকবল নিয়ে সৃজিত বাগানের গাছ কাটার চেষ্টা করেন। এ সময় বাধা প্রদান করলে দুলাল মিয়াকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করেন তারা। পরে এ ঘটনায় দুলাল মিয়া উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি ফৌজদারী অভিযোগ করেন (যাহার নং ৫৯/২৪)। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালত ওই জায়গার উপর ১৪৫ ধারা মতে স্থিতিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন। এতে প্রতিপক্ষরা ক্ষিপ্ত হয়ে হন। এক পর্যায়ে মামলা প্রত্যাহার না করলে প্রতিপক্ষরা দুলাল মিয়াকে প্রাণে হত্যা করবে বলে হুমকি দেন। হুমকির শিকার হয়ে দুলাল মিয়া গত ২০ নভেম্বর লামা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। এতেও তারা থেমে থাকেনি, তারা প্রতিনিয়ত বাগানে সৃজিত গাছ ও পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণ কাজ অব্যাহ রাখেন। এক পর্যায়ে গত ৩১ অক্টোবর অপর মামলা নং ১২৫/২০২৪ দায়ের করলে আদালত ওই জায়গার উপর স্থিতিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন বিজ্ঞ আদালত। অভিযুক্ত বিবাদীরা হলেন–মিরিঞ্জা পাড়ার বাসিন্দা চংতাই ¤্রাে’র ছেলে সামুয়েল ¤্রাে ও ডানিয়েল ¤্রাে, সিংনম ¤্রাের ছেলে রিংরাও ¤্রাে, অহাচন্দ্র ত্রিপুরার ছেলে রুবেন ত্রিপুরা।
ভুক্তভোগী দুলাল মিয়া আরও জানান, সর্বশেষ বান্দরবান জজ কোর্ট এর আদেশের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) পুলিশ স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য বিবাদীদের নোটিশ করেন। কিন্তু তারা আদালতের এ নিষেধাজ্ঞাও মানছেন না। এর আগেও উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে একে একে তিনবার নোটিশ করা হয় কিন্তু তারা স্থিতাবস্থা বজায় না রেখে পাহাড় ও গাছ কেটে স্থাপনা নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখেন।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত রিংরাও ¤্রাে বলেন, আমরা দুলাল মিয়ার জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করছি না। আমাাদের জায়গা হলো ২৮৪নং ইয়াংছা মৌজায়। আর বাদী দুলাল মিয়ার জায়গা হলো ২৯৩নং ছাগল খাইয়া মৌজায়। তাই দুলাল মিয়াদের জায়গা জবর দখল করার প্রশ্নই উঠেনা। বরং তারাই আমাদের জায়গা জবর দখলের জন্য মামলা হামলা করছেন। তাছাড়া স্থিতাবস্থার আদেশের নোটিশ পাওয়ার পরও আমরা আদালতকে সম্মান জানিয়ে কাজ বন্ধ রেখেছি। তবে মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাদেরকে হয়রানির পাশাপাশি প্রশাসনকে বিভ্রান্তি করছেন দুলাল মিয়ারা।
এ বিষয়ে লামা থানা পুলিশের সহকারি উপ পরিদর্শক মো. ফারুকুর রহমান জানায়, আদালতের নির্দেশনা মতে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে বিরোধীয় জায়গায় বিবাদীদেরকে স্থাপনা নির্মাণ কিংবা কোন ধরণের কাজ না করতে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। এরপরও রিংরাও ¤্রাে’রা নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।