1. admin@paharerkatha.com : paharer katha : paharer katha
  2. info@paharerkatha.com : পাহাড়ের কথা :
রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ০১:৪২ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ:
সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে লামায় কর্মরত সাংবাদিকদের মানববন্ধন লামায়  নদী ভাঙ্গনে বিলীন মেরাখোলার ৫০০ ঘরবাড়ি মসজিদ মাদ্রাসা কবরস্থান সড়ক ও ২০০ একর ফসলি জমি : অর্ধশত ঘরবাড়ি ও শতশত একর ফসলী জমি বিলিনের আশংকা, ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্লক স্থাপনের দাবী ইউনিয়নবাসীর নাইক্ষ্যংছড়িতে নতুন সদস্য ও নবায়ন কর্মসূচী লামা তথ্য অফিসের উদ্যোগে আলীকদমে নারী সমাবেশ  ও জুলাই আন্দোলনের ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী লামায় সিএইচসিপি এসোসিয়েশন’র নতুন সভাপতি জ্যোতিষ, সাধারণ সম্পাদক জুনাইদুল রক্তাক্ত ৩৬ জুলাই উপলক্ষে এবং জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে নাইক্ষ্যংছড়িতে জামায়াতের গণমিছিল অনুষ্ঠিত লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সেবিকাসহ জনবল সংকট, সেবা বঞ্চিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিসহ প্রায় ৩ লাখ মানুষ, দ্রুত জনবল সংকট নিরসনের দাবী উপজেলাবাসীর লামায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামি আন্দোলনের বিজয় মিছিল আলীকদমে অপার নির্জনতার নাম ‘চেয়ারম্যান লেক’ আলীকদমে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা দিলেন চট্টগ্রাম লায়ন্স ক্লাব গোল্ডেন সিটি ইয়াংছা উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা ‘২৫ অনুষ্ঠিত নাইক্ষ্যংছড়িতে যাত্রী কল্যাণ সমিতির নতুন কমিটি গঠিত রামুর ডাকাত শাহীনের সহযোগী আবছার অস্ত্রসহ নাইক্ষ্যংছড়ির বিজিবির হাতে আটক   লামায় নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর’র অভিযান

লামায়  নদী ভাঙ্গনে বিলীন মেরাখোলার ৫০০ ঘরবাড়ি মসজিদ মাদ্রাসা কবরস্থান সড়ক ও ২০০ একর ফসলি জমি : অর্ধশত ঘরবাড়ি ও শতশত একর ফসলী জমি বিলিনের আশংকা, ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্লক স্থাপনের দাবী ইউনিয়নবাসীর

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫৭ বার পড়া হয়েছে

মো. নুরুল করিম আরমান | 
বান্দরবান জেলার নদী বেষ্টিত একটি পাহাড়ি ইউনিয়নের লামা সদর ইউনিয়ন। জেলার লামা উপজেলায় অবস্থিত এ ইউনিয়নের উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম -এ তিন পাশ ঘেষে বয়ে গেছে মাতামুুহুরী নদী। ইউনিয়নের দক্ষিণ পশ্চিম কোনে নদীর পাশ ঘেষে ’নামার পাড়া’ নামের একটি পাড়া স্থাপিত হয় ১৯২৮ সালে। এ পাড়ায় ধীরে ধীরে গড়ে ৫০০ পরিবারের বসতি। কিন্তু গত ২৭ বছরের অব্যাহত মাতামুহুরী নদী ভাঙ্গনে পাড়াটি সম্পূর্ণ বিলিন হয়ে গেছে। এতে গৃহহারা হয়েছেন ৫০০ পরিবার। শুধু তাই নয়, এ সময় মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও ২০০ একর ফসলি জমিও এ নদী গিলে খেয়েছে। চলতি বর্ষায় নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে প্রায় অর্ধশত বসতঘর সহ শত শত একর ফসলি জমি ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে। এসব বিলীন হওয়ার আশংকায় সংশয়ে জীবন যাপন করছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা। দ্রুত নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা না গেলে, নামার পাড়ার পর অচিরেই প্রাচীন এ ইউনিয়নের মানচিত্র থেকে মেরাখোলা গ্রামটিও বিলিন হয়ে যেতে পারে। তাই ত্রাণ নয়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় ব্লক দ্বারা ভাঙ্গন রোধের জোর দাবি তুলেছেন ইউনিয়নবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপচে পড়ে মাতামুহুরী নদী। এ সময় তীব্র ¯্রােতের টানে ভাঙ্গতে শুরু করে নদীর কূল। ১৯৮৭ সালের বন্যার সময় প্রথম উপজেলার লামা সদর ইউনিয়নের নামার পাড়ায় ভাঙ্গন দেখা দেয়। এরপর ১৯৯৮ সাল থেকে এ ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করে। অব্যাহত ভাঙ্গনে এ পর্যন্ত একটি মসজিদ, একটি মাদ্রাসা, তিনটি সড়ক, ৫০০ ঘরবাড়ি ও ২০০ একর ফসলি জমি নদীতে বিলিন হয়েছে। এছাড়া ইউনিয়নের একমাত্র কবরস্থানটির অধিক অংশও নদী গর্ভে চলে গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে নি:স্ব অনেকে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা হয়েছেন। চলতি বর্ষায় প্রায় অর্ধশত ঘরবাড়ি ও শতশত একর ফসলি জমি ভাঙ্গনের মুখে।
সরেজমিন দেখা গেছে, মেরাখোলা গ্রামটির দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশের অর্ধ কিলোমিটার এলাকা প্রতিনিয়ত ভেঙ্গে নদীতে পড়ছে। তায় নামার পাড়া’র ঘর-বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। গাছপালা কেটে ফেলা হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে কয়েক একর জমি মাতামুহুরী নদীতে বিলীন হয়েছে, বিলিন হয় কৃষক সোলেমানের ঘরও। ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে স্থানীয় মোজাম্মেল, রাহেলা বেগম, আব্দুল হামিদ, মনিয়া, রোহানা বেগম, আব্দুর রশিদ, আব্দুর সত্তার, নুর আয়েশা, সামছুসহ প্রায় অর্ধশত মানুষের ঘরবাড়িও। প্রতিদিনই ভাঙ্গছে ফসলি জমি। একমাত্র কবরস্থানটির বেশিরভাগ ভেঙ্গে নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। আরও শত শত একর ফসলি জমি ভাঙ্গন ঝুকিতে রয়েছে।
এ সময় কথা হয় নদী ভাঙনে ৮ বার ক্ষতিগ্রস্ত ইব্রাহিম’র সাথে, তিনি বলেন, ‘বিগত দিনে ৮ বার নদীগর্ভে ঘর-বাড়ি হারিয়েছি। এবার আবার নদী ভাঙনে কবলে পড়েছি। বর্তমানে ‘জমি কিনে নতুনভাবে বসতভিটা তৈরির সামর্থ্য আমার আর নেই। নদীর ভাঙন আমাকে নিঃস্ব করেছে কিন্তু এখনো পর্যন্ত কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি কেউ। আমার মত অনেকে আছেন, যারা ঘরবাড়ি ফসলি জমি হারিয়ে নি:স্ব হয়েছেন। ‘আমরা সরকারি সাহায্য চাই না, নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চাই’।
জানতে চাইলে ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আক্তার কামাল জানান, ইউনিয়নের নামার পাড়াসহ পুরো মেরাখোলা ও বৈল্লারচর গ্রামের ৫০০ পরিবার এরই মধ্যে গৃহহীন হয়েছে। নদী ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে লামা সদর ইউনিয়ন মানচিত্র থেকে মুছে যাবে। গৃহহীন হয়ে পড়বে বাকী পরিবারগুলোও। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন স্থানীয় মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে অনেকবার অবগত করা সহ ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতিবছর একের পর এক নি:স্ব হচ্ছেন বাসিন্দারা।
গ্রামের সর্দার ছব্বির আহমদ ও স্থানীয় মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, মেরাখোলা গ্রামে প্রায় ১০০০ পরিবারের বসবাস। এরি মধ্যে মাতামুহুরী নদীর ভাঙ্গনে নামার পাড়ার মাদ্রাসা মসজিদ সড়ক সহ ৫০০ পরিবারের বসতঘর বিলিন হয়ে গেছে। একমাত্র কবরস্থানটিও বিলিনের পথে। তাই সরকারের কাছে নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি এলাকাবাসীর।
নদী ভাঙ্গনের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শহীদুল ইসলাম জানায়, প্রতি বছরই নদী ভাঙনে মেরাখোলা গ্রামটি ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। বিশেষ করে অব্যাহত ভাঙ্গনে নামার পাড়াটি বিলিন হয়ে গেছে, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫০০ পরিবার, মসজিদ, মাদ্রাসা, সড়ক ও কবরস্থানও। এছাড়া ভেঙ্গে গেছে ২০০ একর ফসলি জমি। এতে নি:স্ব হচ্ছে বাসিন্দারা। তিনি আরও জানায়, গত বছর কিছু বহুঘরবাড়ি ভেঙে গেলে, অন্যত্র আশ্রয় নেয় কিন্তু এক বছর পার না হতেই আবার ভাঙনের কবলে পরেছেন তারা। নদী ভাঙ্গনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী তুলে জাইকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এবার পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মঈন উদ্দিন বলেন, সদর ইউনিয়নের মেরাখোলায় নদী ভাঙ্গনের খবর পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। অব্যাহত ভাঙ্গনে বাসিন্দারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ভাঙ্গন রোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দেয়া হবে।
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী অরূপ চক্রবর্তী জানান, লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা গ্রামটি ভাঙ্গন রোধে প্রকল্প গ্রহণ করে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট