
মংছিংপ্রু মার্মা |
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও নানা আয়োজনে বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবজ্যা অনুষ্ঠান সম্পাদন হয়েছে। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নে বাইশপাড়ি পাড়ার মার্মা সম্প্রদায়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রবজ্যা অনুষ্ঠান। এতে ৩৬জন বৌদ্ধ কুলপুত্রকে প্রবজ্যা প্রদান করা হয়। এই অনুষ্ঠানর মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা গৃহ ও সংসার ত্যাগ করে সন্ন্যাসী জীবনে প্রবেশের প্রথম ধ্যান হিসাবে ব্রত গ্রহণ করেন শ্রমণরা।
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার হারবাং বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত উঃ চাইন্দ্যা মহাথেরো প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ৩৬ জনকে সন্ন্যাসী জীবনে দীক্ষা দেন এসময় উপজেলার ছাগলখাইয়া বৌদ্ধ বিহারে অধ্যক্ষ ভদন্ত উঃ জিয়া ওয়াই সাজয়বংশ মহাথেরো, আলীকদম বাবুপাড়া বৌদ্ধ বিহারে অধ্যক্ষ ভদন্ত উঃ পইংঞাতাজা মহাথেরো, চাম্পাতলী বৌদ্ধ বিহারে বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত উঃ পইংঞাতাজা মহাথেরো বিশেষ অতিথি ছিলেন। এছাড়া উপজেলা বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে অধ্যক্ষগণ তে অংশ গ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে প্রবজ্যা অনুষ্ঠান পরিচালনা কমিটি’র সদস্য সচিব সাইংথোয়াই মার্মা জানান, অনুষ্ঠানের দিন সকালে বাইশপাড়ি বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, সংঘদান, ছোয়াইং দান ও পঞ্চশীল প্রদান করা হয়। দুপুরের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার শতশত পূর্ণার্থীবৃন্দ শ্রমণ বৃত গ্রহণ মঞ্চে উপস্থিত থেকে গুরুভিক্ষু থেকে পঞ্চশীল গ্রহন করেন। পরে পণ্যার্থীদের উদ্দেশ্যে ধর্ম দেশনা ও অনুষ্ঠান উৎসর্গ প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনুঅং চৌধুরী, গজালিয়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উসাচিং মার্মা ও হেডম্যান মংক্যচিং চৌধুরীসহ প্রমুখ অংশ গ্রহণ করেন। এ সময় উপজেলার সাবেকউপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনুঅং চৌধুরী বলেন, “প্রবজ্যা শব্দের অর্থ হলো সন্যাস জীবন গ্রহণ। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি অত্যান্ত পবিত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান। প্রত্যেক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সারাজীবনে একবার হলেও সাতদিনের জন্য প্রবজ্যা গ্রহণ করে থাকেন। জাগতিক মোহ-মায়া,পাপ-তাপবর্জন করে অবিদ্যা,অজ্ঞতা ও তৃষ্ণাকেক্ষয় করে দুঃখ ও দুঃখের উৎপত্তি স্থলকে সমূলে উৎপাটন করে জীবনের গুঢ় তত্ত্বকে আত্মোপলব্ধির লক্ষ্যে প্রবজ্যা গ্রহণ করা হয়।