হাতিয়া প্রতিনিধি।
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ঠিকাদারের দুই কর্মীকে চোর সন্দেহে বেঁধে রেখে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে জাহাজমারা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর হেয়ার আসাদ নগরে দুলালের দোকানে দুজনকে মারধর করা হয়।
নিহত লোকমান হোসেন (৩৫) শেরপুর সদর উপজেলার চকপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। শুক্রবার দুপুরে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদরে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এর আগে রাত ৮টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
এ সময় দোকানে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা অবস্থায় মোস্তাফিজুর রহমান (২৮) নামে পিডিবি ঠিক্দারের অপর কর্মীকে উদ্ধার করে পুলিশ। মোস্তাফিজের বাড়ি শেরপুরের শ্রিবরদী উপজেলার পূর্ব জিনিয়া গ্রামে।
এদিকে ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত স্থানীয় এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। আটক তারেক আজিজ (৩৫) জাহাজমারা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চর হেয়ার গ্রামের কামাল উদ্দিনের ছেলে এবং পেশায় ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রী।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা বলেন, ‘নিহত লোকমান হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান ঠিকাদার বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের কাজ শেষ করার পর অপ্রয়োজনীয় ১৬০ কেজি মালামাল বিক্রির জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জাহাজমারা ইউনিয়নের আসাদ নগরে ভাঙারি ব্যবসায়ী দুলালের দোকানে যায়। এ সময় স্থানীয় ইলেক্ট্রিশিয়ান তারেক আজিজসহ তিনজন মিলে বিক্রি করতে নেওয়া মালামালগুলো চুরির বলে তাদের দুজনকে দোকানে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে। এক পর্যায়ে তারেক লোহার দণ্ড দিয়ে লোকামানের ডান হাতে ও পিঠে আঘাত করেন। এ সময় দুই শতাধিক উৎসুক লোক সেখানে ভিড় করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের দুজনকে উদ্ধার করে। এ সময় লোকমান প্রচণ্ড ঘামতে থাকেন এবং পায়খানা–প্রস্রাব করে দেন। দ্রুত পুলিশ তার বাঁধন খুলে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় লোকমানের।’
ওসি আরও বলেন, ‘খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক জাহাজমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দুজন এএসআই ঘটনাস্থলে যায়। এরপর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ও হাতিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারসহ আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিক তদন্ত ও প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা অনুযায়ী লোকমানকে মারধরের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তার পিঠে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।’
মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাতিয়া থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা। তিনি বলেন, ‘নিহতে পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আটক অভিযুক্ত তারেক আজিজকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় পিডিবি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বা নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ঘটনাস্থল থেকে বিক্রি করতে নেওয়া ১৬০ কেজি মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।’