লামা প্রতিনিধি |
বান্দরবান জেলার লামা উপজেলায় দীর্ঘ ৩০ বছরের ভোগদখলীয় জমি বিক্রেতা কর্তৃক জোর পূর্বক দখল চেষ্টা ও প্রাণ নাশের হুমকির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী দুই পরিবার। উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের নয়াপাড়ার ভুক্তভোগী আকতার হোসেন ও ফোরকান উদ্দীন পরিবারের লোকজন যৌথভাবে জমি বিক্রেতা প্রতারক মাহাবুবুর রহমান ও চকরিয়া উপজেলার জাফর আলম গংদের বিরুদ্ধে এ সংবাদ সম্মেলন করেন। শুধু তায় নয়, প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এক খতিয়ানের জমি ৭ বার বায়নামা মূলে বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করায় জমির মালিক মাহাবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ ও অবৈধভাবে সৃজনকৃত বায়নামানা বাতিলসহ জমি রক্ষায় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানান জমির প্রথম ক্রেতার ক্ষতিগ্রস্তরা।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিরোধীয় জমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগীরা বলেন, লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের নয়াপাড়ার বাসিন্দা হাজী আবদু জলিলের ছেলে মাহাবুবর রহমানের ৩০৬ নং ফাইতং মৌজার ২৮ নং খতিয়ানে ২ একর ৮০শতক জমি রয়েছে। নগদ টাকার প্রয়োজন হলে এ খতিয়ানের সম্পূর্ণ জমি পাশের আহমদ হোছনের ছেলে মাশুক আহমদ ও ছালামত আলীর ছেলে সামশুল আলমের কাছে ১৯৯৪ সালের ৫ অক্টোবর ৩ লাখ ৫ হাজার টাকায় বায়নানামা রেজিষ্ট্রি মূলে বিক্রি করে জমির দখল ক্রেতাকে বুঝিয়ে দেন বিক্রেতা মাহাবুবুর রহমান (যার দলিল নং ৬১৫/১৯৯৪)। কিন্তু বিক্রেতা মাহাবুবর রহমান বিক্রিত জমি ক্রেতার নামে নামজারী করতে মিউটেশন মামলা আজ চালু করবেন, কাল চালু করবেন বলে, কাল ক্ষেপন শুরু করেন। এমনকি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে গোপনে ২০০৯ সালের ৫ মে মাহাবুবর রহমান তার স্ত্রী শাহানারা বেগম, ছেলে মৌঃ রিয়াজ উদ্দীন ও মোহাং হোচন এর ছেলে আহামদ উল্লাহর কাছে একই খতিয়ানের ২ একর ৩০ শতক জমি দ্বিতীয় বারের মত বায়নানামা মূলে বিক্রি করে দেন (যার দলিল নং ৩৪৬/২০০৯)। ভুক্তভোগীরা আরও জানান, ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই একই এলাকার মৃত হাজী ইসলামের ছেলে হাফেজ মোঃ জাহিদুলের কাছে একই খতিয়ান থেকে ২০ শতক জমি রেজিঃ বায়নানামা মূলে বিক্রি করে দেন মাহাবুবুর রহমান (যার দলিল নং ৪৩১/২০১৮)। এরপর প্রতারক মাহাবুবুর রহমান ২০২২ সালে শহিদুল্লাহ মিন্টু নামের জনৈক ব্যক্তির কাছেও ৩৯শতক জমি রেজিঃ বায়না নামামূলে বিক্রি করে দেন (যার দলিল নং ১৩৪৩১৪/২২)। এতেও জমি বিক্রি শেষ হয়নি মাহাবুবুর রহমানের, ২০২২ সালে আবারও ৫৪ শতক জমি বায়না নামাামুলে জাহেদুল ইসলামের কাছে বিক্রি করেন প্রতারক মাহাবুবুর রহমান (যার দলিল নং ৩১৮৬/২২)। এরপর মাহাবুবুর রহমান ৬শতক জমি বায়না নামামুলে আবুল কাশেম নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি দেন (যার দলিল নং ৩১৩/২২)। সর্বশেষ চকরিয়া উপজেলার জনৈক জাফর আলমের কাছে ২ একর ১০ শতক জায়গা বায়না নামামূলে বিক্রি করেন মাহাবুবুর রহমান (যার দলিল নং ডি ৬২৭/২২)। এসব প্রতারণা ও শঠামির বিষয়টি জানতে পেরে জমির প্রথম ক্রেতা মাশুক আহমদ ও সামশুল আলম গং উপজেলা সিনিয়র জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জমি বিক্রেতা মাহাবুবর রহমানের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং- সিআর ২২৪/২২ইং)। বর্তমানে মামলাটি চলমান। এর কিছুদিন পর জমির প্রথম ক্রেতা জমি গ্রহীতা মাশুক আহমদ ও সামশুল আলম মারা যান।
জমি ক্রেতার ওয়ারিশগণ বলেন, বিক্রিত জমি জোর পূর্বক দখলে নিতে আমাদেরকে মামলা, হামলা ও প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছেন মাহাবুবুর রহমান গং। যে কোন মুহুর্তে আমাদের উপর হামলা করতে পারেন, তাই এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনাা করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।