ঢাকা প্রতিনিধি
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহব্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে বলেছেন, আগামীতে খেলা অবশ্যই হবে, তবে তা হতে হবে নিরপেক্ষভাবে ও নিরপেক্ষ রেফারির অধীনে। নিরপেক্ষ রেফারি ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না।তিনি গতকাল সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে ভাসানী ভবন মিলনায়তনে জাসাস ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে এক যৌথ কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আমান উল্লাহ আমান বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন- আসল খেলা হবে ডিসেম্বরের নির্বাচনে। আমি বলতে চাই- আসল খেলা যদি তিনি খেলতে চান, নিরপেক্ষ রেফারি তো লাগবে। রেফারি যদি পক্ষপাতিত্ব করে, সেই খেলা কি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে? হবে না। শেখ হাসিনাকে রেফারি রেখে ওবায়দুল কাদেররা খেলতে চান। কিন্তু শেখ হাসিনা তো নিরপেক্ষ রেফারি নন।
তিনি বলেন, ইউনিয়নে বিএনপির পদযাত্রার কর্মসূচি পন্ড করতে গুলি চালানো হয়েছে, গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ব্যানার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এটা কি নিরপেক্ষ রেফারির কাজ? এই রেফারি যদি থাকেন এবং তার অধীনে যদি নির্বাচন হয়, জনগণ আবারো ভোট দিতে পারবে না। আমরা বলবো- আগামীতে খেলা অবশ্যই হবে, তবে তা হবে নিরপেক্ষভাবে, নিরপেক্ষ রেফারির অধীনে এবং সেই খেলায় খালেদা জিয়া জিতবেন।
আমান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নিরপেক্ষ রেফারি ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। তারাই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। তাদের অধীনেই আগামীতে নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ক্ষমতাসীনরা স্বপ্ন দেখছেন- শেখ হাসিনার অধীনে তারা ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন করবেন। বিএনপিকে আবারও ছয়টি আসন দেবেন। সরকারের সেই স্বপ্ন এবার দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। জনগণ এবার এ ধরনের প্রহসনের কোনো নির্বাচন হতে দেবে না। প্রশাসনকে বলবো- আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন, আপনাদের ভয় নেই। গুম-খুনের নির্দেশদাতাদেরই বিচার হবে।
আমান বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ আজ দিশেহারা। কিন্তু মানুষের কষ্ট লাঘবে সরকারের কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেই। জনগণের কাছে এই সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। কারণ, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত নয়।
তিনি বলেন, মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি অসুস্থ হলেও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনিও সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। এই সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যখনই মানুষ রাজপথে নেমেছে, প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে- তখনই তারা গুলি চালিয়েছে। এভাবে হত্যা-গুম, নির্যাতন-নিপীড়ন করে আবারও ক্ষমতায় থাকতে চায় তারা।
জাসাস ঢাকা মহানগরের আহব্বায়ক শরীফুল ইসলাম স্বপনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন আনুর সঞ্চালনায় যৌথসভায় মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও জাসাসের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জাকির হোসেন রোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।