প্রিজন ভ্যান করে কক্সবাজার কারাগার থেকে বুধবার সকালে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনা হয় কক্সবাজার-১ (চকরিয়া -পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে। সকালে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হলে সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে ৭টি মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (১৮জুন) সকালে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুল কবির তদন্তকারী কর্মকর্তাদের পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জাফরের বিরুদ্ধে এই আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানাগেছে, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাবেক এমপি জাফর আলমের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় পাঁচটি ও পেকুয়া থানায় দুটি মামলার আসামি। এর মধ্যে চকরিয়া থানার ৫টি মামলায় ১৪ দিন ও পেকুয়া থানার ২টি মামলায় ৪ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। জাফর আলমকে আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিটে কাঠগড়ায় তোলা হয়।
৭টি মামলায় শুনানি শেষে ৯টা ৩৭ মিনিটে তাঁকে কাঠগড়া থেকে নামিয়ে চকরিয়া থানার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে, সাবেক এমপি জাফর আলমকে আদালতে আনার খবরে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে থানা রাস্তার মাথা এলাকায় জড়ো হতে থাকেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
সেখানে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন চকরিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এনামুল হক, চকরিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম, সাবেক উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফখরুদ্দিন ফরায়জী। সমাবেশ থেকে জাফর আলমের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।
অপরদিকে, সাবেক এমপি জাফর আলমকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হচ্ছে দাবি করে এর প্রতিবাদে ঝটিকা মিছিল করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিছু নেতা-কর্মীরা। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার মগবাজার এলাকায় তাঁরা ঝটিকা মিছিলটি বের করেন। এতে নেতৃত্ব দেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন, খুটাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম মিঠু ও চকরিয়া পৌরসভা যুবলীগের কর্মী এনামুল হক মঞ্জু।
চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. গোলাম সরওয়ার বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমের চকরিয়া থানার চারটি ও পেকুয়া থানার দুটি হত্যা মামলা এবং চকরিয়া থানার বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তারা আদালতে পৃথকভাবে জাফর আলমের ২৪ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলেন। আদালত শুনানি শেষে এসব মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যে জাফর আলমকে চকরিয়া আদালতে রিমান্ড শুনানির জন্য তোলা হয়। আদালতের আশপাশে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ বিভিন্ন স্তরে কঠোর নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলে। সকালে বৃষ্টি থাকায় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপের কারণে কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, ১৪ দিনের রিমান্ডের জন্য সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমকে চকরিয়া আদালত থেকে চকরিয়া থানায় আনা হয়েছে। রিমান্ড শেষ হলে পুনরায় তাঁকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হবে বলে জানান তিনি।