1. admin@paharerkatha.com : paharer katha : paharer katha
  2. info@paharerkatha.com : পাহাড়ের কথা :
শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ০২:১৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
তিন পার্বত্য জেলায় বিষবৃক্ষ তামাক ছেড়ে ইক্ষু চাষে ফিরেছেন ১ হাজার ৪২৭ চাষি, উৎপাদন করেন ৩ লাখ ৩২ হাজার ৮০০ টন আখ ও ৯২.৮ মেট্রিক টন গুড় বান্দরবানে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সভাপতি আলমগীর, সম্পাদক রুমু বান্দরবানে জীবনরক্ষার সামগ্রী ছাড়াই বিপজ্জনক ভ্রমনে পর্যটকরা, প্রাণ যাচ্ছে একের পর এক ঘুমধুম সীমান্তে ফেরে বিজিবির অভিযানে ১লাখ পিস বার্মিজ ইয়াবা উদ্ধার রাঙামাটিতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের গুলি বিনিময় : তিন সন্ত্রাসী আটক : অস্ত্র ও সরঞ্জাম জব্দ নাইক্ষ্যংছড়িতে ছয় দফা দাবিতে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি লামায় বিভিন্ন অপরাধে ৫ প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ টাকা জরিমানা নাইক্ষ্যংছড়িতে অনুষ্ঠিত হলো কাব কার্নিভাল-২০২৫ লামায় ৬ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্য কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে একজনের পা বিচ্ছিন্ন রোয়াংছড়িতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বিষয়ক প্রশিক্ষণ নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে পা উড়ে গেছে কিশোরের রোয়াংছড়িতে বিএনপি’ র সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ ফরম বিতরণী কর্মসূচি উদ্বোধন

বান্দরবানে জীবনরক্ষার সামগ্রী ছাড়াই বিপজ্জনক ভ্রমনে পর্যটকরা, প্রাণ যাচ্ছে একের পর এক

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে
এস বাসু দাস | 

মানুষের জন্য ভ্রমণ প্রশান্তির, কিন্তু সেই ভ্রমণ প্রাণঘাতী হয়ে উঠলে এর চেয়ে পরিতাপের আর কিছুই থাকে না। বান্দরবানের পাহাড়ে ভ্রমণের জন্য সঠিক গাইডলাইন ব্যবহার না করা ও জীবনরক্ষাকারী সামগ্রী ছাড়াই ভ্রমনের ফলে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ও প্রাণ হারানোর শঙ্কা দিনদিন বেড়ে চলছে।

জানা যায়, জেলার রুমায় ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর থেকে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। মাঝে কিছুদিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলে গত বছরে পুরো জেলায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এক মাস পর ৬ নভেম্বর থেকে জেলা সদর, লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করায় লামা, আলীকদমে পর্যটকদের আনাগোনা তুলনামূলক ভাবে বহুগুণে বেড়েছে। যার ফলে প্রতিদিন আনাচে-কানাচে অসংখ্য পর্যটক লামা-আলীকদমে প্রবেশ করে।

আলীকদম উপজেলা প্রশাসনের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আলীকদমে মাসে ৬০০-১২০০ জন পর্যটক ঘুরতে আসে, তবে বন্ধের মৌসুমগুলোতে পর্যটকের সংখ্যা তার দ্বিগুণ বেড়ে যায়। বর্ষায় পাহাড়ে বিভিন্ন ঝিরি ও খাদগুলোতে রয়েছে মরণফাঁদ। অভিজ্ঞ ট্রাভেল গাইডলাইন না মানলে মুখোমুখি হতে হয় দূর্ঘটনা, ফলে প্রান হারাচ্ছে অনেক পর্যটক।

চটগ্রাম থেকে আলীকদমে ঘুরতে আসা উৎপল বড়ুয়া পাহাড়বার্তা’কে বলেন, আলীকদমে গভীরে রাস্তা ও পরিবেশ সম্পর্কে অবগত না থাকায় পর্যটকরা জীবনরক্ষকারী সামগ্রী নিয়ে আসেনা। এমন কি কোনো গাইডও তাদেরকে কিছুই বলেনা।

পাহাড়ের এই অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনাগুলো নিয়ে গবেষকরা বলছেন, পাহাড় ভ্রমনে গাইডলাইন না মানলে বর্ষায় পাহাড়ে না যাওয়া নিরাপদ। প্রত্যক পর্যটকদের উচিৎ, পাহাড়ের প্রকৃতি সম্পর্কে অবগত থাকা ও আবহাওয়ার পূর্বাভাস সম্পর্কে ধারণা নেওয়া উচিত। কারণ ভ্রমণের মতো রোমাঞ্চে ভরা কার্যক্রমগুলো করার সময় অনেক ক্ষেত্রে অনেক বেশি হ্যাপি হরোমন নিঃসৃত হয়; এর মাত্রা বেশি হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই অভিযাত্রীরা অসতর্ক হয়ে পড়েন, যার ফলে ঘটে চরম দুর্ঘটনা।

কুমিল্লা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক ফজলে ইলাহি পাহাড়বার্তা’কে জানান, ঘুরতে আসার জন্য গাউডরা শুধুমাত্র পাহাড়ে ছয় সাত ঘন্টা হাঁটতে হবে বলে নিয়ে আসেন, জীবনরক্ষকারী সামগ্রী নিয়ে আসতে হবে কিনা তা কেউ বলেনা।

জানা যায়, চলতি মাসে আলীকদমের ক্রিসতং পাহাড়, থানচির লিমান লিবলু এবং সাকাহাফং অভিযানে ৩৩ জনের একটি দল পাঁচ দিনের ভ্রমণে জন্য বের হয় “ট্যুর এক্সপার্ট” নামে এক ফেইসবুক ট্রাভেল গ্রুপের সাথে। সেই দলের ২২ জনের দলের ৩জন গত ১১ জুন শামুকঝিরি ঝর্ণায় পাহাড়ি ঢলে ভেসে যায়। তাঁদের মধ্যে ১৯ জন ফিরে এলেও জুবাইরুল, হাসান ও স্মৃতি নিখোঁজ হন। পরে ১২ জুন জুবাইরুল ইসলামের লাশ ও ১৩ জুন স্মৃতি আক্তারের লাশ পাওয়া যায়, তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছে ট্যুর গ্রুপের হোস্ট হাসান চৌধুরী।

পরে নিহত স্মৃতি আক্তারের বাবা “যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা, আবহাওয়ার সতর্কতা এবং প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়া ভ্রমণ আয়োজন এবং আয়োজকদের গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ট্যুর এক্সপার্ট গ্রুপের মূল এডমিন বর্ষা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি জামিনও পান। অন্যদিকে ২০২৩ সালের ১২ আগষ্ট এই বর্ষা ইসলামের স্বামী মোহাম্মদ আতাহার ইশরাক রাফি আলীকদমে সাইম্প্রা ঝর্ণায় গিয়ে খাদ থেকে পড়ে মারা যায়।

বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর (নিবন্ধন ও পরিচালন) বিধিমালা ২০২৪ অনুযায়ী, পর্যটকদের সাথে প্রতারণা, মিথ্যা তথ্য প্রদান, নিরাপত্তা অবহেলা, নিবন্ধনবিহীন সেবা, শিশু শ্রম বা প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতি সবই শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

উপজেলার মেঘচূড়া হিল রিট্রিট মালিক মোহাম্মদ মাসুম পাহাড়বার্তা’কে জানান, পর্যটকদের এই অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনার কারণে আলীকদমে পর্যটকের আনাগোনা কমে আসছে, ব্যবসায়িরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পর্যটকের এই অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনাগুলোকে নিয়ে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, পাহাড় সম্পর্কে অভিজ্ঞতা নেই এমন মানুষ বিপদজনক বর্ষা মৌসুমে ভ্রমনে আসছে। অধিকাংশ পর্যটক জীবনরক্ষাকারী সামগ্রী, সেফটি জ্যাকেট, রশি, টাচলাইট, পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করেন না। ফলে পর্যটকদের একের পর এক মর্মান্তিক দূর্ঘটনার মুখে পড়তে হচ্ছে।

আলীকদম উপজেলা ট্যুর গাইড এসোসিয়েশনের সভাপতি মিন্টু কর্মকার জানান, আমরা জীবনরক্ষাকারী সামগ্রী এখনো ব্যবহার করিনি, তবে এবার থেকে সেফটি জ্যাকেট নিয়ে যাবো।

এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন পাহাড়বার্তা’কে বলেন, কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে পর্যটকদের জন্য জীবনরক্ষকারী সামগ্রী, সেফটি জ্যাকেট, রশি ও টাচ লাইট বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট