
লামা প্রতিনিধি।
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলায় সুপারি চোরের অপবাদ দিয়ে গ্রাম্য বিচারের নামে মারধর করার পর অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে ওমর ফারুক বাবু (১৭) নামে এক কিশোর। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বমু বিলছড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মাইট্টাটিলা পাড়ায় ঘটনাটি ঘটে। ওমর ফারুক বাবু মাইট্টাটিলা পাড়ার বাসিন্দা বশির আহমদ ও আয়েশা বেগমের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বেলা ৩টার দিকে নিজ বাড়ির দোকানের পেছনের বারান্দায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ওমর ফারুক। প্রথমে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী শারমিন আক্তার তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার দিলে স্বজনরা দ্রুত উদ্ধার করে কাছাকাছি লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসকরা ওমর ফারুক বাবু কে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে নিহতের মা আয়েশা বেগম বকেন,বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামের কিছু লোক আমার ছেলেকে ‘সুপারি চোর’ বলে অভিযোগ তোলে। পরে রাতে এরশাদ মিস্ত্রির দোকানে বৈঠকের নামে বিচার বসে। সেখানে মেম্বার শফি, সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ হোচন, ও তাদের সহযোগীরা আমার স্বামী বশির আহমদও ছেলেকে প্রকাশ্যে মারধর করেন। এই অপমান সইতে না পেরে আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে।”
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে মাইট্টাটিলা পাড়ার এরশাদ মিস্ত্রির দোকানে সুপারি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। ওই বৈঠকে মেম্বার শফি, সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ হোচন, সর্দার এরশাদ মিস্ত্রি, মানিক মিয়া উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক চলাকালীন ওমর ফারুকের পরিবারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন,“ এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, এ ঘটনাটি কোনোভাবেই ‘বিচার’ হতে পারে না—এটি একটি স্পষ্ট সামাজিক নিপীড়ন ও আইনের শাসনের পরিপন্থী কাজ। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।