1. admin@paharerkatha.com : paharer katha : paharer katha
  2. info@paharerkatha.com : পাহাড়ের কথা :
সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ:
লোহাগাড়ায় জাল টাকার নোটসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ঈদগাঁওয়ে চার মাসেও বই পায়নি শিক্ষার্থীরা লামা বিভাগের মাতামুহুরী বাঁশ মহাল নিলাম না দেয়ায় কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত সরকার লামায় ১০ জুয়াড়ি আটক, ভ্রাম্যমান আদালতে জেল-জরিমানা লামায় রাহবার ফাউন্ডেশন’র ফ্রী চিকিৎসা পেলেন অর্ধ শতাধিক নারী পুরুষ মিয়ানমারে পাচারকালে ইউরিয়া সারসহ আটক ১০ পাচারকারী থানচির দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করলেন বিজিবি খাগড়াছড়িতে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগে গ্রেফতার ২ বান্দরবানে শতাধিক শিক্ষার্থীরা পেলেন এপেক্স ক্লাব’র শিক্ষা উপকরণ লামায় ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ’র নতুন সভাপতি মহেন্দ্র, সম্পাদক প্রণয় ও সাংগঠনিক দুর্জয় ত্রিপুরা আলীকদমে পারিবারিক কলহে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা, হাসপাতালে ভর্তি ৩ জন লামায় বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে আরো ৫ জেলে পেলেন ২০টি উন্নত জাতের ছাগল লামায় এপেক্স ক্লাবের শিক্ষা সামগ্রী পেল শিক্ষার্থীরা লামায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালন আলীকদমে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার দায়ে দুই জনকে জরিমানা

পানির কষ্টে অসহায় চিম্বুক পাহাড়ের ম্রো সম্প্রদায়

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: সোমবার, ১ মে, ২০২৩
  • ১৫১ বার পড়া হয়েছে
পাহাড়ের কথা ডেস্ক |

বান্দরবানে চিম্বুক এলাকার প্রায় ৯০টি ম্রো পাড়ায় তীব্র পানি সংকটে দেখা দিয়েছে। বহু দিন ধরে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিলেও বাধ্য হয়েই ঝিড়ির নোংরা পানি খেয়ে জীবনধারণ করছে তারা আর এতে পানিবাহিত নানারকম রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। তীব্র এই পানির সংকট না মিটলে পাড়া ছেড়ে অন্যত্র চলে যাবার কথা জানান ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ হাজার ফুট উপরে বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ের বিভিন্ন পাড়াতে শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট লেগেইে থাকে। আর মার্চ-মে এই তিন মাস যেন পানির কষ্ট আরো বেড়ে যায় ম্রো পাড়াগুলোতে। দুর্গম কয়েক কিলোমিটার পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে ঝিড়ি থেকে খাবারের পানি সংগ্রহ করার অবিরাম চেষ্টা চালায় চিম্বুক পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত পরিবারগুলো। তবে পানির উৎস শুকিয়ে যাওয়ায় নিদারুণ পানির কষ্টে এলাকার বাসিন্দারা এখন মানবেতর জীবনধারণ করছে। বিশুদ্ধ পানির কষ্টে এখন দিনযাপন করছে চিম্বুক পাহাড় এলাকার রামড়ী পাড়া,বাগান পাড়া,বাইটা পাড়া, হেডম্যান পাড়া, যামিনী পাড়াসহ ৯০টি পাড়ার বাসিন্দারা।

সম্প্রতি চিম্বুক পাহাড়ের আশেপাশে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সব পানির উৎস শুকিয়ে গেছে। কোথাও চলতে চলতে ঝিড়ির শেষ মাথায় গর্তে অল্প পানি জমা আছে, সেখান থেকেই বিভিন্ন পাড়ার বাসিন্দারা ময়লাযুক্ত পানি সংগ্রহ করছে।

জেলা শহর থেকে ১২কিলোমিটার দূরে ম্রোলং পাড়া, সেই পাড়ার বাসিন্দা রাংমে ম্রো বলেন, ঝিড়ি থেকে পানি আনতে আসা-যাওয়ায় দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। ভোর ৪টায় পানি আনতে গিয়ে সকাল ৬টার সময় পাড়ার ফিরে আসা যায়। দুই মগ পানি নেওয়ার পর আট মিনিট থেকে দশ মিনিট পানির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। বয়স্ক নারীরা রাত দুটা তিনটার সময় পানি আনতে ঝিড়িতে চলে যায়। তিনি আরো বলেন,আমাদের পাড়ায় প্রচুর পানির কষ্ট। পানির কোন ভালো উৎস নেই, প্রাকৃতিকভাবে ঝিড়িতে কিছুটা পেতাম তবে গরমের কারণে ঝিড়িও শুকিয়ে গেছে।

রামরীপাড়ার বাসিন্দা পানলা ম্রো বলেন, পানির অভাবে দুই থেকে তিন মাস পর্যন্ত নিয়মিত গোসল করা যায় না, যারা কাজে যায় যে যেখানে পানি পায় সেখানে গোসল করে আর ফেরার সময় অল্প পানি পেলে সেটাই নিয়ে বাড়িতে যায়।

রামরীপাড়ার বাসিন্দা প্রেনপ্রে ম্রো বলেন, চিম্বুক এলাকায় কম হলেও ১০হাজার মানুষ বসবাস করে কিন্তু তারা সুপেয় পানি পাচ্ছে না আর ময়লা পানি খেয়ে সারাবছরই নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই মারা যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন,আমরা প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি সুদৃষ্টি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলছে, নির্বিচারে পাহাড় থেকে বৃক্ষ ও পাথর নিধনের ফলে পাহাড়ের পানির উৎসগুলো দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আর শুস্ক মৌসুম আসলে এর খেসারত দিতে হয় সাধারণ জনগণকে।

ম্রো ভাষার লেখক ও গবেষক ইয়াং ঙান ম্রো বলেন, বান্দরবানের সবচেয়ে পানির কষ্টে এমন দুর্গম গ্রামগুলোতে। বিশেষ করে চিম্বুক পাহাড়ের আশেপাশের ম্রো জনগোষ্টি এখন পানির অভাবে কষ্ট পাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন,একসময় ঝিড়িতে প্রচুর পানি থাকলেও গত কয়েক বছর ধরে পানির অভাবে সবারই কষ্ট বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরের মধ্য শুধু পানির অভাবে ম্রো জনগোষ্ঠী চিম্বুক এলাকা থেকে অন্য জায়গায় চলে যেতে বাধ্য হবে বলে।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য সিং ইয়ং খুমী বলেন, বনাঞ্চল ধংস, ঝিড়ির পাথর উত্তোলন করে পানির উৎস ধংস করার কারণে প্রতিবছর চিম্বুক এলাকার প্রায় ৯০টি পাড়ার ম্রো সম্প্রদায় বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভোগে। পানির অভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজ ব্যাহত হওয়ায় পাশাপাশি ফল-ফলাদি উৎপাদন কমে যাচ্ছে।

রামরী পাড়ার কারবারী (পাড়া প্রধান) মেনরুম ম্রো বলেন, চিম্বুক এলাকার মানুষের এখন সবচেয়ে বড় কষ্ট পানি। নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবহার ও খাবার জন্য কোথাও পানি নেই। ফল বাগানে দেয়ার মত পানির অভাব।

সুত্রে জানা যায়, বিশুদ্ধ পানির অভাবে ২০২১সালে জেলার আলীকদমের কুরুকপাতা ইউনিয়নে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ম্রো জনগোষ্ঠীর ৭জনের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছিল আর ২০২২ সালে থানচি উপজেলায় ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা যায় আরো ৮ জন, আর নানা ধারণের রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল অসংখ্য পাড়াবাসী।

এদিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী শর্মিষ্টা আচার্য্য জানান, দুর্গম এলাকায় পাথরের কারণে টিউবওয়েল স্থাপন করা যায় না, সেখানে রিংওয়েল স্থাপন এবং যেসকল ঝিড়িতে শুষ্ক মৌসুমেও পানি থাকে সেখানে বরাদ্ধ সাপেক্ষে জিএফএস পদ্ধতিতে পানি সরবরাহ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট