1. admin@paharerkatha.com : paharer katha : paharer katha
  2. info@paharerkatha.com : পাহাড়ের কথা :
রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ১১:৩৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ:
লোহাগাড়ায় জাল টাকার নোটসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ঈদগাঁওয়ে চার মাসেও বই পায়নি শিক্ষার্থীরা লামা বিভাগের মাতামুহুরী বাঁশ মহাল নিলাম না দেয়ায় কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত সরকার লামায় ১০ জুয়াড়ি আটক, ভ্রাম্যমান আদালতে জেল-জরিমানা লামায় রাহবার ফাউন্ডেশন’র ফ্রী চিকিৎসা পেলেন অর্ধ শতাধিক নারী পুরুষ মিয়ানমারে পাচারকালে ইউরিয়া সারসহ আটক ১০ পাচারকারী থানচির দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করলেন বিজিবি খাগড়াছড়িতে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণের অভিযোগে গ্রেফতার ২ বান্দরবানে শতাধিক শিক্ষার্থীরা পেলেন এপেক্স ক্লাব’র শিক্ষা উপকরণ লামায় ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদ’র নতুন সভাপতি মহেন্দ্র, সম্পাদক প্রণয় ও সাংগঠনিক দুর্জয় ত্রিপুরা আলীকদমে পারিবারিক কলহে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা, হাসপাতালে ভর্তি ৩ জন লামায় বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে আরো ৫ জেলে পেলেন ২০টি উন্নত জাতের ছাগল লামায় এপেক্স ক্লাবের শিক্ষা সামগ্রী পেল শিক্ষার্থীরা লামায় জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস পালন আলীকদমে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার দায়ে দুই জনকে জরিমানা

চকরিয়ায় কাঠের সেতু ভেঙে নদীতে, ঝুঁকি নিয়ে পারাপার: ১৩ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩
  • ১৯৭ বার পড়া হয়েছে

চকরিয়া প্রতিনিধি |

★ ডিঙি নৌকায় নদী পারাপারে চরম ঝুঁকিতে স্কুল ও মাদ্রাসা পডুয়া শত শত শিক্ষার্থী ★ ৩৪ বছর পূর্বে উপজেলার কোনাখালী ও ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের মধ্যবর্তী শাখা নদীর ভরামুহুরী খালে সেতুটি নির্মিত ★ স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পানির প্রবল স্রোতের তোড়ে সেতুটি ভেঙে লন্ডভন্ড

 

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ও ডেমুশিয়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে মাতামুহুরী শাখা নদী। এ নদীর ওপরে দুই ইউনিয়নের ১৩ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের জন্য বিগত ৩৪ বছর পূর্বে একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্তমানে সেতুর কাঠগুলো সম্পূর্ণ পঁচে নষ্ট হয়ে গেলে শুক্রবার সেতুটি ভেঙে নদীতে নিপাতিত হয়। এতে বিভিন্ন গ্রামের ১০-১২ জন নারী-পুরুষ সেতু পারাপার সময়ে গুরুতর আহত হয়ছেন। বর্তমানে চরম ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট ডিঙি নৌকায় নদী পারাপারে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়েছে স্কুল ও মাদ্রাসা পডুয়া শত শত শিক্ষার্থী। সেতু ভেঙে যাতায়াত বন্ধ হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে ১৩টি গ্রামের অন্তত অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। কোনাখালী ও ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের সংযোগস্থল খালের ওপরে নতুন করে স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, বিগত ৩৪ বছর পূর্বে উপজেলার কোনাখালী ও ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের মধ্যবর্তী শাখা নদী ভরামুহুরী খালের ওপরে একটি বেসরকারি এনজিও সংস্থার অর্ধায়নে প্রায় ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য লোহার এঙ্গেল ও কাঠ দিয়ে একটি সেতু নির্মাণ করেন। সেতুটি নির্মিত হওয়ার পর কয়েক বছর যেতে না যেতেই ওই ব্রিজের কাঠের পাতাটন, পিলারগুলো মরিচিকায় ধরে নষ্ট এবং অকেজো হয়ে ভেঙ্গে যায়।

মধ্যম কোনাখালী ভরামুহুরী খালটি এক সময় খরস্রোতা নদী হিসেবে পরিচিত ছিল। এখানকার মানুষের যাতায়তের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা। দুই ইউনিয়নের মানুষের নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। মানুষের যাতায়াতে রাস্তা-ঘাট ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না অনুন্নত। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও কালের পরিক্রমায় দুই ইউনিয়নের মানুষের যাতায়তের ভোগান্তি দেখে বিগত ১৯৯১ সালে ভয়াবহ প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বসের পরে এনজিও সংস্থার অর্ধায়নে ওই সেতুটি নির্মাণ করেছেন বলে জানায় স্থানীয়রা। সেতুর দু’পাশের এঙ্গেল সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেলে মাদ্রসা ও স্কুলের শত শত শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষ দুর্ঘটনা পতিত হয়ে অনেকই পঙ্গু হয়ে যায়। বছরের পর বছর দীর্ঘ সময় ধরে দুই ইউনিয়নের সমাজ হিতৈষী কতিপয় ব্যক্তি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের অর্থায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নদী পারাপার লাগবে সেতুটি কাঠের তক্তা বসিয়ে জোড়া তালি দিয়ে মেরামত করে উপযোগী করে তোলেন। চলতি বর্ষা মৌসুমে সম্প্রতি সময়ের ভয়াবহ বন্যার পানি প্রবল স্রোতের তোডে সেতুতে লাগানো কাঠের তক্তা গুলো পঁচে নষ্ট হয়ে যায়। এরপরও চরম ঝুঁকি নিয়ে ১৩ গ্রামের মানুষ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ওই ভাঙা কাঠের সেতু দিয়ে পারাপার করে আসছিল। গতকাল শুক্রবার সেতুটি সম্পূর্ণ ভেঙে নদীতে নিপাতিত হয়ে যায়। এতে বিভিন্ন গ্রামের ১০-১২ জন নারী-পুরুষ সেতু পারাপার সময়ে গুরুতর আহত হয়। সেতুটি ভেঙে যাওয়ার কারণে শত শত শিক্ষার্থীদের যাতায়ত করতে ভোগান্তির যেন অন্তনেই।একটি সেতুর অভাবে দুই ইউনিয়নের অর্ধলক্ষ জনগোষ্ঠী ও তের গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ হয়ে উঠে চরমে।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, দুই ইউনিয়নের মানুষের চাষাবাদ ও শত শত শিক্ষার্থীর যাতায়াত দুর্ভোগ লাঘবের সুবিধার্থে সেতু নির্মাণ করা হলেও প্রায় একযুগ আগে এটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। ওই অবস্থায় কাঠের তক্তা জোড়া-তালি দিয়ে সেতুটি মেরামত করলেও ভয়াবহ বন্যার পানিতে সেতুটি নিমজ্জিত ছিল। যার কারণে সেতুর কাঠগুলো পঁচে নষ্ট হয়ে যায় গেলে সেতুটি ভেঙে পড়ে খালে। এ পরিস্থিতিতে অসংখ্য স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ উপকূলীয় কোনাখালী ও ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ১৩ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের যেন অন্ত নেই। বিভিন্ন সরকারের সময়ে অনেক জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা কাঠের সেতুটিকে স্থায়ী সেতু নির্মাণ করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে গেলেও পরে কেউ মনে রাখে না। তবে জনপ্রতিনিধি আসে আর যায় কিন্তু কথা দিয়ে কেউ কথা রাখেনি। কাঠের এই সেতু দিয়ে নিয়মিত দুই ইউনিয়নে মৌলভীপাড়া, লতাবুনিয়া পাড়া, খাতুর বাপের পাড়া, ডিয়ারপাড়া, সিকদার পাড়া, মুছারপাড়া, জমিদার পাড়া, নোয়াপাড়াসহ ১৩টি গ্রামের মানুষ যাতায়ত করতো। সেতুর উপর দিয়ে এমন একটা সময় গেছে মোটরসাইকেল, রিক্সাসহ ভারী যানবাহন পর্যন্ত চলাচল করে আসছিল। কিন্তু বর্তমানে সেতুটি ভেঙে খালে পড়ে গেলেও প্রশাসন কিংবা জনপ্রতিনিধি কেউই জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে আসছেন না স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ।

কোনাখালী দারুল ইরফান মাদ্রাসার হেফজ বিভাগ ও এতিমখানার পরিচালক হাফেজ মৌলানা নুরুল কাদের জানান, দুই ইউনিয়নের অন্তত ১৩ গ্রামের মানুষ ও শত শত শিক্ষার্থীর যাতায়াতের সুবিধার্থে ভাঙা কাঠের এ সেতুটি জরাজীর্ণ ও চলাচল অনুপযোগী হয়ে গেলে নিজস্ব অর্থায়নে সংস্কার করা হয়। নিজস্ব অর্থায়নে কয়েকদফা মেরামত করলেও বর্তমানে সেতুটি ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। এহেন পরিস্থিতিতে অসংখ্য স্কুল, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ উপকূলীয় কোনাখালী ও ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট্ট ডিঙি নৌকায় পারাপারে যেন দুর্ভোগের শেষ নেই। তাই চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত সেতুটি সংস্কার বা স্থায়ী পাকা সেতু নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

কোনাখালী এলাকার শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হাসান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি সংস্কার না করা কারণে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। তাই প্রবল বৃষ্টির কারণে সেতুর কাঠগুলো পঁচে নষ্ট হয়ে যায়। যার কারণে সেতুটি ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সেতু না থাকার কারণে ছোট্ট নৌকা করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে চরমভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ডেমুশিয়া মুছারপাড়া এলাকার কৃষক আবদুর রহিম জানান, স্থায়ীভাবে সেতু না থাকার কারণে এখানকার কৃষক চাষাবাদের কৃষি পণ্য হাট-বাজারে নিয়ে যেতে ভোগান্তি ও দুর্ভোগের শিকার হয়। উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারজাতে ব্যাপক অসুবিধার সৃষ্টি হয়। ভোট আসলে সব প্রতিনিধি ব্রিজটি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচিত হওয়ার পর বাস্তবে তার বিপরীত। এ পর্যন্ত কোন চেয়ারম্যান বা জনপ্রতিনিধি তাদের কথা রাখেনি। এছাড়াও কোন গ্রামের গর্ভবতী মায়েদের চিকিৎসা বা জরুরি কোন রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া খুব কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তাই এখানে স্থায়ী একটি পাকা সেতু নির্মাণ জরুরি।

চকরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কর্মকর্তা শাফায়াত ফারুক চৌধুরী বলেন, সেতুটির বর্তমান অবস্থা পরিদর্শন না করা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। আজ পরিদর্শন করে পরবর্তী সেতুটির ব্যাপারে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান।

এ প্রসঙ্গে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেতুটির ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা আমাকে অবহিত করেছেন। সরেজমিন পরিদর্শনপূর্বক নতুন করে স্থায়ী একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে সেতু ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি এলজিইডি বিভাগকে বলা হয়েছে। জনগণের দুর্ভোগ পোহাতে যেন না হয় সেই বিষয়ে দ্রুত প্রদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট