1. admin@paharerkatha.com : paharer katha : paharer katha
  2. info@paharerkatha.com : পাহাড়ের কথা :
মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ:
বান্দরবানে সেনা অভিযানে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত কোয়ান্টাম শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষাটাই দিচ্ছে : এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহিল আজম লামায় কারিতাস বাংলাদেশ’র উদ্যোগে সামাজিক সুরক্ষায় প্রবেশাধিকার বিষয়ক সেমিনার লামায় জমি নিয়ে বিরোধে জের ধরে সংঘর্ষ : নিহত ১, আহত ৭ লামার গজালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রাউসের পুষ্টি কর্ণার সীমান্ত সড়ক পশ্চাদপদ পার্বত্য অঞ্চলকে উন্নয়নের স্রোতধারায় একীভূত করেছে ম্যানেজ করেই চলছে মইজ্জ্যারটেকের হাক্কানী পশুখাদ্য কারখানা! সরকার আন্তরিক বলে বান্দরবানের চেহারার পরিবর্তন হয়েছে : বীর বাহাদুর লামায় ইয়াংছা বাজার ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচনে হামিদ সভাপতি, তালহা সেক্রেটারী নির্বাচিত লামায় আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে ৯ শতাধিক ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড লামায় শত্রুতার আগুনে পুড়ল ৯০ একর রাবার বাগান : ৯০ লাখ টাকার ক্ষতি বান্দরবানে কেএনএফ দমন অভিযান : স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটি আলীকদমে চেয়ারম্যান প্রার্থী জামাল উদ্দিন’কে নিয়ে অপপ্রচারের অভিযোগ বান্দরবানে নির্বাচনী প্রচারণা স্থগিত রাখার ঘোষণা চেয়ারম্যান প্রার্থী একে এম জাহাঙ্গীরের লামায় পর্বত ট্রাভেল্স এন্ড হজ্ব কাফেলার যাত্রা শুরু

লামায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের ‘বৈসাবি’ উৎসবকে ঘিরে মাতোয়ারা পাহাড়ি পল্লী

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: রবিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৪
  • ২৪ বার পড়া হয়েছে
বান্দরবানের লামায় বৈসাবি উৎসবে পানি খেলায় মংছিংপ্রু মার্মা ও সো সো ওয়ান জুটি। -লামা প্রতিনিধি।

নিজস্ব প্রতিবেদক |
পাহাড়ে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব ‘বৈসাবি’। গেল ২০২১ ও ২২ সালে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কারণে এ উৎসব ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় পালন করতে পারেনি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিরা। এ বছর পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় উৎসবকে ঘিরে পাহাড়ি পল্লীগুলো সেজেছে নতুন সাজে, ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। মাতোয়ারা বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার প্রত্যন্ত পাহাড়ি পল্লীগুলো। ১৪ এপ্রিল রবিবার সকালে ক্যায়াং দর্শন ও সমবেত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ উৎসব শুরু হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে উপজেলার একটি পৌরসভা এলাকা সহ ইউনিয়ন পর্যায়ে পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি সম্প্রদায়ের পাড়াগুলোর বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন, ক্লাব, সমিতির উদ্যোগে সাংগ্রাইং পোয়ে জলকেলি উৎসব পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানান আয়োজক কমিটি। উৎসবের দিনগুলোতে আনন্দে হয়ে উঠেছে পাহাড়ি বাঙ্গালীর স¤প্রীতির এক মিলনমেলা। ১৪ এপ্রিল শুরু হয়ে ২০ এপ্রিল শনিবার লামা সদর ইউনিয়নের মেরাখোলা মার্মা পাড়ার পানি খেলার মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ উৎসব।
জানা গেছে, লামা উপজেরার একটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টি চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা সম্প্রদায় বর্ষবরণকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হিসেবে পালন করে থাকেন। ১৯৮৫ সাল থেকে পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উৎসব পালন করে আসছেন। যা সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে ‘বৈসাবি’ হিসেবেই জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এ উৎসবকে সামনে রেখে উপজেলাগুলোর হাট-বাজারে কেনা-কাটা ধুম পড়েছে। বিপনী বিতানগুলোতে পাহাড়ি তরুন-তরুনীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষনীয়।
বর্ষবরণ ও বিদায় উপলক্ষে ত্রিপুরা সম্প্রদায় ‘বৈসুক’, মারমা সম্প্রদায় ‘সাংগ্রাই’ এবং চাকমা সম্প্রদায় ‘বিজু’ নামে এ উৎসব পালন করে থাকেন। একত্রে ৩টি আদ্যাক্ষর নিয়ে বৈ-সা-বি বলে পাহাড়ে এই উৎসব পরিচিত। চৈত্রের শেষ দিনের আগের দিনকে বলা হয় ফুল বিজু। এদিনে ফুল দিয়ে ঘরবাড়ি সাজানো হয়। দ্বিতীয় দিন চৈত্র সংক্রান্ত ‘বৈসাবি’ অথবা মূল বিজু। এদিনকে উৎসবের প্রধান দিন ধরে নেয় চাকমারা। ত্রিপুরা ও মারমারা এদিন পালন করলেও তাদের জন্য ১ বৈশাখ হচ্ছে গুরুত্বপুর্ণ দিন। মূল বিজুর সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে ‘পাচন’ (অনেক রকমের শাক-সবজি, ফল মুলের সমন্বয়ে রান্না করা তরকারি)। এই পাচনে যে যত পদের সবজি মেশাতে পারবে তার গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। এদিন নতুন কাপড় পরে বাড়ি বাড়ি বেড়ানো, পাজন খাওয়া চাকমাদের আনন্দ উদ্যাপনের মূল আয়োজন। চাকমাদের মধ্যে প্রচলিত আছে যে, বিজুর দিন কমপক্ষে পাঁচ বাড়িতে বেড়াতে হবে। এসব বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে পাজন খেলে পরবর্তী ৩ মাস কোন রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হবেনা কেউ। পাচনের সঙ্গে ভাত থেকে তৈরি পানীয় অর্থাৎ দো-চুয়ানী (বাংলা মদ)। এই দো-চুয়ানী ছাড়া চাকমা সমাজে বিজু, বিয়ের অনুষ্ঠান কখনও সম্পন্ন হয়না। এই রীতি এখানে প্রচলিত। আর এই দিন বাংলা মদ খেতে কোন বাধা নেই। খাও দাও অনাবিল আনন্দে মেতে ওঠে, এটাই রীতি।
ত্রিপুরা সম্প্রদায় এদিন উদ্যাপন করে তাদের ঐতিহ্যবাহী বিশেষ নাচের মাধ্যমে। যার নাম ‘গড়াইয়্যা নৃত্য’। নারী পুরুষ সবাই এক সঙ্গে নাচে। এ নাচের বিশেষত্ব হচ্ছে, যে বাড়ি থেকে এ নাচ শুরু হবে সে বাড়িতেই এসে নাচ শেষ করতে হবে। ত্রিপুরাদের এই উৎসবকে ‘বৈসুক’ বলে।
মারমা সম্প্রদায় ১ বৈশাখ পালন করে বর্ণিল জলকেলী বা পানি উৎসবের মধ্য দিয়ে। পুরনো বছরের সব দুঃখ হতাশাকে মুছে ফেলার জন্য জল ছিটানো উৎসব (পানি খেলা)। যা মারমা সম্প্রদায়ের ‘সাংগ্রাই’ উৎসব নামে পরিচিত। অবশ্য আধুনিকতার ছোঁয়ায় চাকমাদের সাংগ্রাই উৎসবের নাম এখন ‘ওয়াটার ফেষ্টিভ্যাল’ রাখা হয়েছে। নারী-পুরুষ মারমা গানের তালে তালে একে অপরকে পানি ছিটিয়ে একে অপরকে জলে টুইটুম্বুর করে ভেজানোর প্রতিযোগিতা করেন। এই জলকেলির মাধ্যমে মারমা তরুন-তরুনী একে অপরের মাঝে ভালোবাসার বিনিময় হয়। একইভাবে ত্রিপুরা, বম, পাংখোয়া স¤প্রদায়গুলোও সাংস্কৃতিক অনুষ্টান ও নিজস্ব খাবারের আয়োজন করে এ উৎসবে।
শুধু তা?য় নয়, এ বৈসাবি উৎসবকে ঘিরে পাড়ায় পাড়ায় নানা খেলা-ধুলারও রয়েছে ঘিলাখেলা, নাদেরখেলা, বলিখেলা, ফোরখেলা, পুত্তিখেলা ও তুমুরো খেলা এবং তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে উপরে উঠা খেলারও আয়োজন করা হয়। আয়োজক ও জনপ্রতিনিধিদের মতে এবারে পরিবেশ-পরিস্থিতি অনুকুলে থাকায় উৎসব মখুর পরিবেশে ‘বৈসাবি’ পালন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে লামাা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের গাইন্দ্যা পাড়া উৎসব পরিচালনা কমিটিরি আহবায়ক মংক্যহ্লা মার্মা জানান, এ বছর উৎসবের দিনগুলোতে বড় পরিসরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পানি খেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির সহ ধর্মিনী মেহ্লাপ্রু উপস্থিত থাকবেন। এদিকে উপজেলার কেন্দ্রীয় ‘বৈসাবি’ উৎসব উদ্যাপন কমিটির আহবায়ক অংচাইন ওয়াং ও সদস্য সচিব যতিন মার্মা বলেন, গেল ২০২১ ও ২২ সালে করোনা ভাইরাসের কারণে উৎসাহ উদ্দীপনায় উৎসব পালন করা যায়নি। গত বছর থেকে পরিস্থিতি স্বাবাভিক হওযার কারণে উৎসব মখুর পরিবেশে পালনের আয়োজন করা হয়। তারা বলেন, বৈসাবিকে সামনে রেখে ৭ দিনের বর্ণাঢ্য কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে পাড়ায় পাড়ায় ক্যয়াং দর্শন ও সমবেত প্রার্থনা, দড়ি টানাটানি, হাড়ি ভাঙ্গা, পিঠা তৈরি, ঐতিহ্যবাহী তৈলাক্ত বাঁশ আহরণ, পানি খেলা, সাংস্কৃতিক ও পুণর্মিলনী অনুষ্ঠান।
এ বিষয়ে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. শামীম শেখ বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিরা যাতে ‘বৈসাবি’ উৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুূখর ভাবে পালন করতে পারেন, সেজন্য বৌদ্ধ কেয়াং ও পাড়াগুলোতে সাদা পোশাক ও পোশাকধারী পুলিশ মোতায়েন সহ বিশেষ নজরদারীতে রাখা হয়েছে।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট